বাংলার মিষ্টির সম্ভার – কোন জেলার কি বিখ্যাত, জানেন?
বাংলার মিষ্টির বিশ্বজোড়া নাম। শুধু কি রসগোল্লাতেই মন ভরেছে বাঙালির? কক্ষনো না। বাংলার খাজানায় রয়েছে রঙবাহারি মিষ্টির সম্ভার।এক এক জায়গার এক এক মিষ্টি বিশ্বজয় করেছে।
বাংলার মিষ্টির বিশ্বজোড়া নাম। শুধু কি রসগোল্লাতেই মন ভরেছে বাঙালির? কখনও না। বাংলার খাজানায় রয়েছে রঙবাহারি মিষ্টির সম্ভার।এক এক জায়গার এক এক মিষ্টি বিশ্বজয় করেছে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক বাংলার কোন কোন অঞ্চলের কি কি মিষ্টি বিখ্যাত
রসগোল্লা, কলকাতা

মিষ্টি বললেই যার কথা প্রথম মনে পড়ে তা হল রসগোল্লা। রসগোল্লা হল মিষ্টির রাজা। ১৮৮৬ সালে বাগবাজারের নবীন চন্দ্র দাস প্রথম নরম তুলতুলে সাদা রসগোল্লা তৈরি করেন। তারপর থেকে গোটা বিশ্বের মন জয় করে এই রসগোল্লা। রসগোল্লা এক্কেবার কলকাতার নিজের মিষ্টি। ২০১৭ সালের ১৪ই নভেম্বর জিআই স্বীকৃতিও পায়।
পান্তুয়া, রানাঘাট

পান্তুয়াও বাংলার এক প্রসিদ্ধ মিষ্টি। এর মধ্যে নদীয়া জেলার রানাঘাটের পান্তুয়া সব থেকে বেশি বিখ্যাত। এছাড়া কাটোয়া, কালনার পান্তুয়াও বিখ্যাত। রানাঘাটের জগু ময়রাকে পান্তুয়া uiর জনক বলা হয়।
ল্যাংচা, শক্তিগড়

বর্ধমানের শক্তিগড়ের ল্যাংচা পৃথিবী বিখ্যাত। শোনা যায় বর্ধমানের রাজা এক ময়রাকে বলেন তিনি নতুন ধরনের ভাজা মিষ্টি খেতে চান। তখন ওই ময়রা মহারাজকে ল্যাংচা বানিয়ে খাওয়ায়। এভাবেই ল্যাংচার জন্ম হয়। ময়রা ল্যাংড়া ছিলেন বলে মিষ্টিটির নাম ল্যাংচা রাখা হয়।
রস কদম, মালদা

আলাউদ্দেন হুসেনের রাজত্বকালে মালদার রামকেলিতে এসেছিলেন চৈতন্যদেব। তিনি বিশ্রাম নিয়েছিলেন এক কদম গাছের নীচে। শোনা যায় সেই ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতেই এই মিষ্টিটির নাম দেওয়া হয় রস কদম।
কানসাট, মালদা:

মালদার আমের পড়েই যা সবথেকে বেশি বিখ্যাত তা হল কানসাট। কানসাট বাংলাদেশের একটি জায়গা। এই মিষ্টিটির প্রবর্তক কানসাট গ্রামের মহেন্দ্র নাথ সাহা। দেশভাগের পর এই পরিবার কানসাট ছেড়ে মালদায় এলে তখন থেকে শুরু হয় মালদায় এই মিষ্টি তৈরী।
মোয়া, জয়নগরঃ

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের মোয়া খুব বিখ্যাত। এই মোয়ার প্রবর্তক পূর্ণ চন্দ্র ঘোষ বলে মনে করা হয়। জিআই স্বীকৃতিও পেয়েছে এই মোয়া।
সরভাজা, কৃষ্ণনগরঃ

কৃষ্ণনগর কথাটি শুনলেই যেটা প্রথম মাথায় আসে তা হল সরভাজা। কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় সরভাজার ভোগ আবশ্যিক। এই সরভাজার এখন দেশজোড়া নাম।
মনোহরা, জনাইঃ

মনোহরা বাংলার এক অতি প্রসিদ্ধ মিষ্টি। হুগলীর জনাই এবং মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গার মনোহরা খুব বিখ্যাত। এটি রসগোল্লার ওপর চিনির প্রলেপ দেওয়া। কিন্তু বর্তমানে বড় বড় মিষ্টির দোকান চিনির পরিবর্তে গুড়ের প্রলেপও দিয়ে থাকে।
ক্ষীড় দই, গঙ্গারামপুরঃ

দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের ক্ষীড়দই তার অতুলনীয় স্বাদের জন্যে বিখ্যাত। এই দইয়ের সাথে বগুড়ার ক্ষীড় দই-এর খানিকটা মিল পাওয়া যায়।
রসমালাই, রামপুরহাটঃ

জানা যায় ১৯৩০ সালে রসগোল্লাকে উন্নত করে রসমালাই তৈরী করা হয়। বীরভূমের রামপুরহাটের রসমালাই খুব জনপ্রিয়।
চমচম, জলপাইগুড়ি

জলপাইগুড়ি জেলার বেলাকোবার চমচম না খেয়ে থাকলে জীবন বৃথা। এই মিষ্টির তুলনা হয় না। পরের বার ডুয়ার্স ঘুরতে এলে অবশ্যই খাবেন কিন্তু।
সীতাভোগ, বর্ধমান

বর্ধমানের সীতাভোগ আর মিহিদানার খ্যাতি সারা বিশ্বজোড়া। এখন তো এখানে মিষ্টিহাবও তৈরি হচ্ছে। রোববার দুপুরে মাংস ভাত খেয়ে অল্প সীতাভোগ সহকারে মিষ্টিমুখের সুখ… আহা!