খড়্গপুরে তেলুগু ভাষায় ভোটের প্রচারে প্রদীপ

ওল্ড সেটেলমেন্ট এলাকার বস্তির সামনে প্রার্থীকে মালা পরিয়ে দেন বাসিন্দারা।

March 23, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
খড়্গপুরে তেলুগু ভাষায় ভোটের প্রচারে প্রদীপ

‘অক্টো তারখিও, অক্টো নম্বরও’ অর্থাৎ এক তারিখ, এক নম্বর। তেলুগু(Telugu) ভাষায় এভাবেই ভোটের আবেদন জানিয়ে এলাকায় চষে বেরালেন খড়্গপুর সদর(Kharagpur Sadar) কেন্দ্রের তৃণমূল (TMC) প্রার্থী প্রদীপ সরকার (Pradip Sarkar)। ঘড়ির কাঁটা সকাল ১১টা পেরিয়েছে। কাটফাটা রোদে গলদঘর্ম অবস্থা। গরম উপেক্ষা করেই খড়্গপুর শহরের ওল্ড সেটেলমেন্ট এলাকায় পৌঁছলেন তৃণমূল প্রার্থী। ওই এলাকায় অধিকাংশই তেলুগু ভাষাভাষির মানুষের বসবাস। তাই প্রার্থী ভোটের আবেদনও জানালেন তেলেগু ভাষাতেই। একদল মহিলা কর্মী সহ দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়েই বাড়ি বাড়ি প্রচার সারলেন তিনি। সবার মাথায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া টুপি। প্রার্থীর পরনে সবুজ পাঞ্জাবি, গলায় মালা। হাসি মুখে এক পাড়া থেকে আর অন্য পাড়ায় ছুটলেন। কাউকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছেন, কারও সঙ্গে আলিঙ্গন। কাউকে হাতজোড় করে প্রণাম করলেন। প্রার্থীর সামনে বাজনা বাজিয়ে চলল কর্মীদের উল্লাস।


এই কেন্দ্র থেকে বরাবর জিততেন খড়্গপুরের মিথ কংগ্রেসের চাচা জ্ঞানসিং সোহন পাল। গত নির্বাচনে সেই মিথ ভেঙে জয় ছিনিয়ে নেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটেও এই কেন্দ্রে অনেক ভোটে এগিয়ে যান দিলীপবাবু। কিন্তু উপনির্বাচনে সব হিসেব পাল্টে দিয়ে জয় ছিনিয়ে নেন তৃণমূলের প্রদীপ সরকার। বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন শহরের বাসিন্দারা। তাই জয় ধরে রাখাই এবার প্রদীপবাবুর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও তাঁর দাবি, জয় তো আসবেই, ব্যবধানও বাড়বে। 
তবে প্রচারে বেরিয়ে মানুষের সাড়া পেয়ে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল প্রার্থী। ওল্ড সেটেলমেন্ট, ধোবিঘাট, ঝাড়খণ্ড বস্তি সহ পাশাপাশি এলাকায় এদিন সকালে তাঁর পদযাত্রা বারবার থমকে গিয়েছে। কোথাও তাঁকে দাঁড় করিয়ে  দক্ষিণ ভারতীয় আচারে এলাকার মহিলারা কপালে তিলক এঁকে মাথায় ফুল ছড়িয়ে বরণ করেছেন। কোথাও তাঁর গলায় মালা পরিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গাছের তলায় দাঁড় করিয়ে ঘরের ছেলের মতো ঠান্ডা জল এনে রোদে পোড়া মুখ ধুয়ে নেওয়ার জন্য আবদার করেছেন বাসিন্দারা। প্রচার চলাকালীন বৃদ্ধা বি রাও বলেই ফেললেন, তোমার আসার কোনও দরকার ছিল না। আমরা তোমাকে ছাড়া আর কাকে চিনি?


একটি চার্চের সামনে দিয়ে প্রদীপবাবুর পদযাত্রা যাচ্ছিল। সেই সময় চার্চের ফাদার তাঁর গলায় মালা পরিয়ে শুভকামনা জানান। মিশনারি স্কুলের কর্মীরাও গলায় মালা পরিয়ে দেন। এরপর বস্তির সামনে তাঁকে দাঁড় করিয়ে মোবাইলে ছবি তোলেন বাসিন্দারা। তাঁকে ঘিরে তেলেগুদের মধ্যে একটা আলাদা উচ্ছ্বাস দেখা যায়। সাঁইবাবার মন্দিরে নিয়ে গিয়ে প্রার্থীর জন্য পুজোও দেওয়া হয়। টি লক্ষ্মী বলেন, উনি এই শহরের জন্য অনেক করেছেন। তাই ভগবানের কাছে ওঁর হয়ে পুজো দিয়ে প্রার্থনা করলাম।


ওল্ড সেটেলমেন্ট এলাকার বস্তির সামনে প্রার্থীকে মালা পরিয়ে দেন বাসিন্দারা। বাড়ি থেকে সবাই বেরিয়ে এসে জয়ধ্বনি দেন। এক বাসিন্দা বি বেনু বলেন, এই এলাকায় আগে রাস্তা, নিকাশি, বিদ্যুতের ব্যবস্থা ছিল না। উনি সব করে দিয়েছেন। এরপর পদযাত্রা এগিয়ে যেতে থাকে। কাছেই একটি বড় হোর্ডিংয়ে প্রদীপবাবুর ছবির পাশে লেখা ‘সাচ্চা হ্যায়, আচ্ছা হ্যায়। চলো সাথ, চলতে হ্যায়’। তবে, খড়্গপুর তাঁর সঙ্গে চলল কি না, তা জানতে অবশ্য ২মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen