দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

ভোটের আগে অশান্ত গ্রাম, বিজেপিকে দুষছেন মানুষ

March 23, 2021 | 2 min read

চারদিকে বসতি। রয়েছে চাষবাসের জমিও। মূল রাস্তা থেকে গ্রামের ভিতরে চলে গিয়েছে কংক্রিটের রাস্তা। বছর পাঁচেকের এক খুদে সেই রাস্তায় খেলা করছিল। হঠাৎই এক দৌড়ে ঘরে ঢুকে যায় সে। কেন আচমকা চলে গেল, তার কারণ হিসেবে শিশুটির বাবা বললেন, এই জায়গাটি আরামপুর বাদামতলা। এখানেই কিছুদিন আগে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল দুই বিজেপি কর্মীর। তারপর থেকেই যেন যাবতীয় নজর পড়েছে এই এলাকায়। পুলিস এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দিয়ে মানুষের ভয় দূর করার চেষ্টা করছে। তবে চাপা আতঙ্ক এখনও  রয়েছে। হাতে বন্দুক, তাগড়াই চেহারা দেখে পাড়ার বাচ্চারা ভয়ে ঘরে ঢুকে যায়। এমন পরিবেশ কিন্তু কখনওই ছিল না এখানে। বিজেপির দৌলতে আজ এই পাড়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। 


গোসাবার লাহিড়ীপুর, পাঠানখালি, শম্ভুনগরের মতো এলাকা একটা সময়ে গুলি-বোমার লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়েছে। কিন্তু বাকি অঞ্চলগুলিতে কখনওই এমন অভিযোগ শোনা যায়নি। গোসাবা ব্লকের এই আরামপুর তার মধ্যে অন্যতম। এই দ্বীপে সন্ত্রাস হয়েছে, তা কেউ মনে করে বলতে পারলেন না। সবার মুখেই একটা কথা, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও এখানে কোনওদিন মারামারি বা গোলমাল হয়নি। বিস্ফোরণস্থলের একেবারে পার্শ্ববর্তী বাড়ির বধূ বলেন, ভাবতেই পারছি না, আমাদের ঘরের পিছনে এই কাণ্ড হয়েছে। আবার যে এমন হবে না, তা কি কেউ বলতে পারে! রাস্তার উল্টো দিকের একটি মুদি দোকানদার গম্ভীরভাবে বললেন, রাজনীতি করতে গিয়ে এলাকার শান্তি নষ্ট করে দিয়েছে একটি দল। সকাল-বিকেল ভারী বুটের শব্দ শুনতে শুনতে বিরক্ত এই গ্রামের মানুষ।  কয়েকজন প্রবীণ মানুষ বললেন, নির্বাচন তো আগেও হয়েছে। কিন্তু অন্য জায়গায় টহল দিয়েছে পুলিস। এই গ্রামে কখনও কেউ ঢোকেনি। একটা ঘটনাই যেন সব বদলে দিয়েছে। গ্রামে ঢুকলেই আবহাওয়া বদলে যায়। মনে হয় যেন এক অন্য জগতে বাস করছি আমরা। 
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ১০-১২ জন জওয়ান সেই বিস্ফোরণস্থল ঘুরে দেখছেন।

আশপাশের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথাও বলছেন। এক জওয়ান বলেন, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। আমরা তাঁদের ভয়ভীতি কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। পুলিস জানিয়েছে, ওই এলাকায় বিশেষ নজরদারির জন্য নির্দেশ এসেছে। সেইমতো প্রতিদিনই টহল চলছে। 


তবে এই বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে তরজাও কম হয়নি। তৃণমূল প্রার্থী জয়ন্ত নস্করের বক্তব্য, ভোটে সন্ত্রাস করার জন্য বোমা বাঁধছিল বিজেপি কর্মীরা। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে তারা। বিজেপি প্রার্থী চিত্ত প্রামাণিকের পাল্টা কথায়, সবটাই চক্রান্ত। তৃণমূলই ভয় দেখানোর রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। বিজেপি সেটা করে না। দু’দলের মধ্যে চাপানউতোর চললেও, এই গ্রামের মানুষের এখন একটাই চিন্তা, ফের এমন ঘটনা হবে না তো?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #village, #Gosaba

আরো দেখুন