হুগলিতে এখনও ধিক ধিক করে জ্বলছে ক্ষোভে আগুন
কেন্দ্র এবং রাজ্যের নেতৃত্বের মরিয়া প্রচেষ্টার পরেও বিজেপির(BJP) অন্দরে ক্ষোভের আগুন অব্যাহত। কোথাও প্রকাশ্যে, আবার কোথাও গোপনে দলের বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন আদি কর্মীরা। দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে জেলার একাধিক কেন্দ্রে প্রার্থী দাঁড় করাচ্ছেন তাঁরা। যা এরাজ্যে বিধানসভা ভোটের রাজনীতিকে নতুন মোড় দিতে চলেছে। অভিনেতা এবং তৃণমূল(TMC) থেকে ছেড়ে আসা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের নামে ভরেছে বিজেপির প্রার্থী তালিকা। এই নিয়ে কার্যত ক্ষোভে ফুঁসছেন বিজেপি কর্মীরা। দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে দল করার পরেও প্রার্থী হতে না পেরে এবার দলের বিরুদ্ধে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। হুগলি জেলার চন্দননগর, চুঁচুড়া, সপ্তগ্রাম এবং পাণ্ডুয়াতে ইতিমধ্যেই নির্দল হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিজেপির আদি কর্মীরা। সিঙ্গুর, ধনেখালি সহ আরও বহু কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। উদ্দেশ্য, যেনতেন প্রকারে বিজেপি প্রার্থীদের জয় আটকানো।
একদা হুগলি জেলার বিজেপি সভাপতি তন্দ্রা ভট্টাচার্য নিজেই প্রার্থী হচ্ছেন চন্দননগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। তিনি বলেন, প্রায় ৩২ বছর ধরে দলটা করছি। ২০১৬ সালেও বিজেপির টিকিটের চন্দননগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লড়াই করেছি। দুর্দিনে দাঁতে দাঁত চেপে, মার খেয়ে দল করার পর আজ আমরা ব্রাত্য। দলের কাছে আজ গুরুত্ব পেয়েছে তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতারা। তাদের হাত দিয়ে টিকিট বিলি হচ্ছে। বিজেপি ডাস্টবিন পার্টি হয়ে গিয়েছে। নিজের দলে নেতা তৈরির বদলে শুধু ভাড়া করে লোক আনা হয়েছে। অন্যদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক জেলাস্তরের নেতা জানান, লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে আমরা কোনভাবেই মেনে নেব না। দু’জনের সঙ্গে মিটিং-মিছিল সবই হবে, ভোট পাবেন না। লকেট চট্টোপাধ্যায়কে অবধারিতভাবে হারানো হবে। তাতে যদি তৃণমূল জিতেও যায়, তাতে আমাদের দুঃখ নেই। বিজেপির জেলা নেতৃত্ব শ্যামল বোস বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে জানান, এতে কোনও সমস্যা হবে না। আদি, নব্য নিয়ে চলতে হবে। অন্য দল থেকে আসা ব্যক্তিদের প্রার্থী করা নতুন নয়।
যাঁরা বিক্ষুব্ধ হচ্ছেন, তাঁরা মনোনয়ন তুলে নেবেন। এদিকে, বিজেপির অন্দরে বাড়তে থাকা ক্ষোভ প্রসঙ্গে তৃণমূলের হুগলি জেলার সভাপতি দিলীপ যাদব জানান, বিজেপি দলটা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে। পরিযায়ী নেতাদের দিয়ে দল চালানো হচ্ছে। দলের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাঁরা ব্রাত্য হচ্ছেন।আদি কর্মীদের ক্ষোভকে সমর্থন জানিয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দুর্দিনে প্রত্যেকেই দল করেন পরবর্তীকালে তাঁদের চাওয়া-পাওয়াগুলি দেখা হবে বলে। কিন্তু বিজেপি টাকা দিয়ে অন্য দল থেকে প্রার্থী করছে। বিজেপি কর্মীদের ক্ষোভ অবশ্যই সঙ্গত।