দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

শান্তিপুরে মনোনয়ন জমা দিলেন বিজেপির গোঁজ প্রার্থী

March 30, 2021 | 2 min read

বিজেপি প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর থেকেই নদীয়ার প্রায় সব আসনেই অসন্তোষের আগুন জ্বলে ওঠে। সেই আগুন যে নেভেনি, তা সোমবারই স্পষ্ট হয়ে যায়। এদিন শান্তিপুর কেন্দ্রে লড়াই করার জন্য মনোনয়ন জমা দিলেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতা সুফল সরকার (Sufal Sarkar)। তিনি নির্দল হিসেবে লড়াই করবেন। ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে গেরুয়া শিবিরে। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, দল তাঁকে আগেই বহিষ্কার করেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, সুফলবাবু গোঁজ হিসেবে দাঁড়ানোয় পদ্ম শিবিরের ভোট ব্যাঙ্কে প্রভাব পড়বে। গোষ্ঠী কাঁটায় শান্তিপুর (Shantipur) কেন্দ্রে বাড়তি সুবিধা পাবে শাসক দল।

কয়েকদিন আগে এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার শান্তিপুরের গোবিন্দপুর কালীবাড়িতে পুজো দিয়ে মনোনয়ন জমা দেন। এদিন সুফলবাবুও ওই একই মন্দিরে পুজো দিয়ে মনোনয়ন জমা দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন গেরুয়া শিবিরের বিক্ষুব্ধদের একাংশ। তাঁরা এদিন ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেন।

উল্লেখ্য, প্রথম থেকেই এই কেন্দ্রে প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে পদ্ম শিবিরের কর্মী সমর্থকদের একাংশ। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে তাঁরা প্রতিবাদে সরব হন। তখনই সুফলবাবু দাবি করেন, এই কেন্দ্রে প্রার্থী বদল না হলে তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এরপর এদিন তিনি ভারতীয় জনসঙ্ঘ সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে এসডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দেন। যা নিয়ে ভোটের আগে অস্বস্তিতে পড়েছে পদ্ম শিবির।

নির্দল প্রার্থী বলেন, শান্তিপুরবাসী বিজেপির (BJP) জগন্নাথ সরকার ও তৃণমূলের অজয় দে’কে চাইছে না। সেই কারণে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করার জন্যই আমি ভারতীয় জন সঙ্ঘের প্রার্থী হয়েছি। আমাদের প্রতীক চিহ্ন ‘প্রদীপ’। আমি মানুষের জন্য কাজ করি। যাঁরা ন্যায় নীতি আদর্শের দিকে তাকিয়ে দল করে, আমি তাঁদের জন্য কাজ করি। আমি জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই এগচ্ছি।

শান্তিপুরের বিজেপি প্রার্থী বলেন, নির্দল প্রার্থী হিসেবে যে কেউ দাঁড়াতেই পারেন। এতে আমাদের ভোটব্যাঙ্কে কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে শান্তিপুরে যিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন, অতীতে বেশ কয়েকটি নির্বাচনে তিনি বিজেপিতে থেকেও দল বিরোধী কাজ করেছেন। তাই তাঁকে সাংগঠনিক পদ থেকে আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি আমাদের দলের একজন সমর্থক ছিলেন মাত্র। তাঁর কোনও জনসমর্থন নেই।

তবে পদ্ম শিবির কিংবা নির্দল প্রার্থীকে গুরুত্ব দিতে নারাজ শান্তিপুরের তৃণমূল প্রার্থী অজয় দে। এদিন তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, বিজেপি এমনিতেই বিশৃঙ্খল দল। তা শান্তিপুরের মানুষ খুব ভালো করেই জানে। ওদের কোন্দল বা গোঁজ প্রার্থী নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। আমরা সারা বছর মানুষের হয়ে কাজ করেছি। তাই মানুষ উন্নয়নের নিরিখেই আমাদের জয়ী করবেন।

গত বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জোটের প্রার্থী কংগ্রেসের অরিন্দম ভট্টাচার্য জয়ী হয়েছিলেন। তিনি তৃণমূল প্রার্থী অজয়বাবুকে প্রায় ৩৫ হাজার ভোটে পরাজিত করেন। যদিও পরবর্তীতে ওই জোট প্রার্থী প্রথমে তৃণমূল ও পরে বিজেপিতে যোগ দেন। যা নিয়ে এবার ভোটের আগে শান্তিপুরে গেরুয়া শিবিরের ফাটল চওড়া হয়। বিজেপির নিচুতলার কর্মী-সমর্থকরা দলবদলু ওই নেতাকে দলে নেওয়া নিয়ে প্রথম থেকেই বিরোধিতা করেন। ওই দলবদলুকে পুনরায় শান্তিপুরে টিকিট দেওয়া হলে কর্মীদের অনেকেই রাজনীতি থেকে বসে যাওয়ার হুংকার দেন। তাই শেষমেশ রানাঘাটের সাংসদকেই এই কেন্দ্রে প্রার্থী করে বিজেপি। কিন্তু, তাতে নতুন করে বিজেপির অন্দরে অসন্তোষ তৈরি হয়। যে কারণে ভারতীয় জনসঙ্ঘ নাম দিয়ে দীর্ঘদিনের বিজেপি নেতা এবার নির্দলের হয়ে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Shantipur, #bjp

আরো দেখুন