শত বছর ধরে জালিয়ানওয়ালা বাগ স্মৃতিসৌধের দেখাশোনায় এক বাঙালি পরিবার
১৯১৯ সালে জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে নিরীহ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালনার সেই স্মৃতি আজও বয়ে বেড়ায় দেশবাসী। সেদিনের গুলি মানেনি কোনও জাতি কোনও ধর্ম। ছিল শুধুই নির্বিচারে বুলেট আর রক্তের স্রোত। তারপর বাকিটা ইতিহাস। আর এই ইতিহাসের স্মৃতিসৌধের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে চলেছে শত বছর ধরে এক বাঙালি পরিবার। যিনি সেদিন জেনারেল ডায়ারের বুলেটের হাত থেকে কোনওমতে নিজেকে বাঁচাতে পেরেছিলেন। ষষ্ঠীচরণ মুখার্জি।
১৯১৯ সালে জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে নিরীহ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালনার সেই স্মৃতি আজও বয়ে বেড়ায় দেশবাসী। সেদিনের গুলি মানেনি কোনও জাতি কোনও ধর্ম। ছিল শুধুই নির্বিচারে বুলেট আর রক্তের স্রোত। তারপর বাকিটা ইতিহাস। আর এই ইতিহাসের স্মৃতিসৌধের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে চলেছে শত বছর ধরে এক বাঙালি পরিবার। যিনি সেদিন জেনারেল ডায়ারের বুলেটের হাত থেকে কোনওমতে নিজেকে বাঁচাতে পেরেছিলেন। ষষ্ঠীচরণ মুখার্জি।
প্রতিদিনের পর্যটক বা ভিআইপিদের আনাগোনার অগোচরে এই মুখার্জি পরিবারের বর্তমান সদস্য সুকুমার মুখার্জি আজও দেখাশোনা করেন এই জালিয়ানওয়ালা বাগ মেমোরিয়াল। তাঁর বয়স ষাঠ পেরিয়েছে। তিন প্রজন্ম ধরে তাঁরাই এই মেমোরিয়ালের দেখভাল করছেন। প্রথম ষষ্ঠীচরণ, তারপর উপেন্দ্রনারায়ণ এখন সুকুমারবাবু। বংশানুক্রমে তিনিই এখন এই মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সচিব।

হুগলির বাসিন্দা ছিলেন এই ষষ্ঠীচরণ মুখার্জি। বর্তমানের প্রয়াগরাজ বা ইলাহবাদে তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিত্সা করতেন। ১৯১০ সালে মদনমোহন মালব্য তাঁকে অমৃতসরে নিয়ে যান। জড়িয়ে পড়েন স্বাধীনতা আন্দোলনে। ১৯১৯ এর ১৩ই এপ্রিল জালিয়ানওয়ালা বাগের প্রতিবাদ সভায় হাজির ছিলেন তিনিও। কোনওমতে মঞ্চের নীচে আশ্রয় নিয়ে প্রাণে বাঁচেন তিনি।
এরপর কংগ্রেসের অধিবেশনে তিনি প্রস্তাব দেন এই এলাকা অধিগ্রহণ করা হোক। কারণ ব্রিটিশরা এই এলাকায় বাজার বসিয়ে সেই স্মৃতি মুছে ফেলতে চায়। গান্ধীর নেতৃত্বে চাঁদা সংগ্রহ করা হয় জালিয়ানওয়ালা বাগ ট্রাস্ট তৈরি করতে। তৈরি হয় ট্রাস্ট। মালব্য হন তার সভাপতি। সচিব হন ষষ্ঠীচরণ। দেশ স্বাধীনের পর আইন করে তৈরি হয় ট্রাস্ট। আর এই বাঙালি পরিবারই সেই ট্রাস্টের দেখাশোনা করতে থাকেন।