কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

পাড়ার মেয়ে হয়েই প্রচারে ঝড় তুলছেন অদিতি মুন্সি

April 10, 2021 | 2 min read

তিনি দক্ষিণপাড়ারই মেয়ে। এ পাড়ার নাড়িনক্ষত্র তাঁর জানা। সকাল সকাল বাগুইআটি দক্ষিণপাড়ার মোড়ে তৃণমূল প্রার্থীর (Trinamool Candidate) সুসজ্জিত টোটো বাঁক নিতেই সাড়া পড়ে গেল গোটা এলাকায়। ‘ও দিদি, তাড়াতাড়ি নীচে এস। আমাদের অদিতি এসেছে গো,’ হাঁকতে হাঁকতে বেরিয়ে আসছেন বাড়ির মহিলারা। টোটোয় দাঁড়ানো প্রার্থীর মুখে তখন প্রাণখোলা হাসি। লোকে বলে, রাজনীতি বড় কঠিন ঠাঁই। বিশেষ করে ভোটের ময়দানে তো ঘোল খেয়ে যান তাবড় তাবড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। কীর্তনশিল্পী অদিতি মুন্সি (Aditi Munshi) তো আবার ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েই রাজারহাট-গোপালপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁকে দেখে অবশ্য সেকথা বোঝার জো নেই।

গানের দুনিয়া থেকে সরাসরি রাজনীতি পা রাখার পর এক মাসও কাটেনি। গানে-গল্পে দিব্যি জনসংযোগ চালাচ্ছেন। বুধবারের প্রচার পর্ব অবশ্য স্পেশাল। হবে নাই বা কেন! এখানে তিনি তৃণমূল প্রার্থী, সেলেব্রিটি কিংবা সঙ্গীতশিল্পী নন। এ পাড়ায় তাঁর পরিচয় স্রেফ অদিতি। পাড়ার মেয়েকে দেখতে উপচে পড়া ভিড়, পুষ্পবৃষ্টি শুরু হল মোড় থেকেই। বাকি রাস্তায় প্রচার যত এগিয়েছে ততই বেড়েছে দরজা-বারান্দায় মানুষের ঢল। কোথাও রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ শাঁখ বাজিয়ে বরণ করেছেন। কখনও আবার এপ্রিলের চড়া রোদে ঘুরে ‘ক্লান্ত’ অদিতির জন্য ফলের রস হাতে দাঁড়িয়ে থেকেছেন কেউ। মানুষের এই আবেগ দেখে আপ্লুত প্রার্থীও। 

অদিতির কীর্তনে মোহিত হন শ্রোতারা। এদিন তাঁর ভোট-প্রার্থনাতেও একই রকম মোহিত রাজারহাট-গোপালপুরের মানুষ। কিন্তু ঠান্ডা ঘরে কাটানো সেলেব্রিটি কীভাবে সামলাবেন রাজনীতির মারপ্যাঁচ? বাকিদের মতো এই প্রশ্ন তাড়া করেছে তাঁকেও। প্রচারের ফাঁকেই এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন অদিতি। বললেন, সঙ্গীতজগতের লোক হলে রাজনীতির কিছুই বুঝবেন না, একথার কোনও মানে নেই। ভোট তো সবাই দিয়ে থাকি। রাজনৈতিক বোধবুদ্ধি সবারই থাকে। আমার বাপের বাড়ি দক্ষিণপাড়ায়। রাজারহাট-গোপালপুরের মেয়ে আমি। এখানে সবাই আমার আত্মীয়। তাঁদের জন্য কাজ করব এ আবার নতুন করে শিখতে হয় নাকি!  

প্রচারেও সেই বক্তব্যের প্রতিফলন দেখা গেল। স্থানীয় নেতৃত্ব হাজির থাকা সত্ত্বেও একবারের জন্য অদিতিকে শেখাতে হল না জনসংযোগের কৌশল। বারান্দা থেকে তাকিয়ে থাকা মানুষের দিকে হাত নেড়ে, নিজের গলা থেকে মালা খুলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অশীতিপর বৃদ্ধার গলায় পরিয়ে, টোটো থেকে নেমে অলিগলি ঘুরে প্রমাণ করে দিলেন নিজেকে। আমবাগান এলাকার প্রচারের সময় প্রতিপক্ষের শোভাযাত্রার মুখোমুখি হয়েও এতটুকু বিচলিত হলেন না। একইভাবে হাসিমুখে নমস্কার করে এগিয়ে গেলেন সামনে। গোটা প্রচার পর্বে এমন একটাও বাড়ির দরজা কিংবা বারান্দা ছিল না, যেখানে মানুষ ভিড় করেননি। হাত নেড়ে ‘পাশে আছি’ বার্তা দিতে বিরোধীদলের পোস্টার লাগানো বাড়ি থেকেও বেরিয়ে এসেছেন বাসিন্দারা। যা দেখে তৃপ্ত অদিতির গলায়, ‘আমার বেড়ে ওঠা যে এঁদের মাঝেই..।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Aditi Munshi, #election campaign

আরো দেখুন