পেটের টানে পেশা বদল অনেকের
ওঁরা কেউ ফুচকাওয়ালা, কেউ মুচি, কেউ নাপিত, কেউ রিকশা চালক, কেউ কাঠের মিস্ত্রি, কেউ আবার অটোরিকশা চালক। লকডাউনের জেরে পেশা পাল্টাতে বাধ্য হয়েছেন ওঁদের অনেকেই।
টালিগঞ্জের রানিকুঠির মোড়ে নিয়মিত ফুচকা বেচতেন রমেশ সাউ। পাটনার বাসিন্দা রমেশ লকডাউনের ঘোষণা হওয়া ইস্তক ক্রেতার অভাবে ফুচকা বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। এখন তিনি শহরের ওই তল্লাটের অলিগলি ঘুরে সব্জি বেচছেন। যাদবপুর পালবাজার তল্লাটের কাঠের মিস্ত্রি কেদার সিং এখন সংসার চালাতে গোপনে চা বিক্রি করছেন।
লকডাউনের জেরে পুরোনো পেশায় আপাতত তালা। বাধ্য হয়েই পেটের টানে কেউ মাছ বিক্রি করছেন, কেউ আবার খুলে বসেছেন হোম ডেলিভারির ব্যবসা।
সল্টলেকের দত্তবাদের তপন দত্ত প্রায় এক যুগ ধরে নাগেরবাজার-হাওড়া রুটের একটি বাসে খালাসির কাজ করে আসছেন। তপনের একমাত্র ছেলে বাপনেরও হার্টের রোগ। ফলে, ওষুধের পিছনেই প্রত্যেক মাসে অনেকটা টাকা চলে যায় তপনের। লকডাউনে বাস বন্ধের জেরে ঘোর বিপদে পড়া তপন এখন সব্জি বিক্রি করেন।
দমদম ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসিন্দা আলোক পাল বছর খানেক আগে ধার করে একটি অটোরিকশা কিনেছেন। প্রতি মাসে ধারের ১২ হাজার টাকা কিস্তিতে মেটাতে হয় তাঁকে। আলোক এখন দমদম সেন্ট্রাল জেলের মাঠে মাছ বিক্রি করছেন। তাতে সংসার কোনও রকমে চললেও অটোরিকশা কেনার জন্য ধার নেওয়া টাকা কী ভাবে শোধ করবেন, তা ভেবে থই পাচ্ছেন না তিনি।
হরিদেবপুর এলাকায় একটি ছোট সেলুন নিতাই শীলের। তাঁর কথায়, ‘লকডাউন শুরু হওয়ার পর আর ক্ষুর, কাঁচি, চিরুনিতে হাত দিইনি। জমানো টাকা ভেঙে খরচ চালাচ্ছি।’
শ্যামবাজারের গোলবাড়ির কাছে ফুটপাথে রোজ জুতো সারাই করতে বসতেন মোহন বাল্মীকি। তাঁর কথায়, ‘দিন পাঁচেক হল, অলিগলিতে ঘুরে চা বিক্রি করছি। তাতে যে টুকু রোজগার হয়।’