করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তদের অর্ধেকই তরুণ-তরুণী, উদ্বেগ
ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে কোভিড (Covid 19) পরিস্থিতি। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কমবয়সিরাও। ২০২১ সালের শুরু থেকেই রাজ্যে তরুণদের মধ্যে করোনার শিকার বাড়ছে। এর মধ্যে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল স্বাস্থ্যদপ্তরের নথিতে। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকই তরুণ-তরুণী। আরও স্পষ্ট করে বললে, তাদের বেশিরভাগের বয়স ২০ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ, টিকাকরণের বাইরে থাকা এই বয়ঃসীমাতেই এখন সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত। স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতেই এই প্রবণতা ধরা পড়েছিল। কিন্তু তখন আক্রান্তদের সংখ্যা কম থাকায় সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
এ তো শুধু পরিসংখ্যান! বাস্তব পরিস্থিতি কী সত্যিই এতটা খারাপ? উত্তরে কলকাতার অন্যতম প্রধান কোভিড হাসপাতাল বেলেঘাটা আইডির জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাস্তবের মিল অনেকটাই। আমরা কুড়ির কোঠার রোগীদের অবশ্য তেমন পাইনি। সেটা হয়তো কম বয়সের কারণে তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি বলেই। কিন্তু ৩৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সি অসংখ্য রোগী এখানে আসছেন, ভর্তি হচ্ছেন। অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। বয়স্কদের সঙ্গে তাঁদের উপসর্গের কোনও প্রভেদ নেই। বুধবারই আইডিতে ৫০টি শয্যার ‘জি বি ৬’ ওয়ার্ড চালু হয়েছে। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই ওয়ার্ড প্রায় ভর্তি।
এই পরিস্থিতিতে ৪৫ বছরের নীচেও টিকাকরণ চালু করার দাবি জোরালো হচ্ছে। দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশই এই বয়সের মধ্যে পড়েন। আইসিএমআরের মহামারীবিদ্যার প্রধান ডাঃ সমীরণ পাণ্ডা অবশ্য জানিয়েছেন, যতদিন না ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে নাগরিকদের টিকাকরণ ৮০ শতাংশ সম্পূর্ণ হচ্ছে, ততদিন হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে না। টিকাকরণ যে গতিতে চলছে, তাতে এ কাজে অন্তত চার মাস লাগবে। এই সময়ে ৪৫ বছরের নীচে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব নয়।
ফলে ৪৫ অনূর্ধ্বদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এমনই একজন পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী তীর্থদীপ দাস। তিনি অবশ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের কাজে যুক্ত থাকার জন্য ভ্যাকসিন পেয়েছেন। তবু নিশ্চিন্ত নন। বলছেন, আমার কপাল ভালো। কিন্তু স্ত্রী-সন্তান! তাদের কী হবে?