ভোটের দিন দলের নেতাকর্মীদের পাশে পেলেন না শিখা
শনিবার ভোট শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাবগ্রাম- ফুলবাড়ি বিধানসভা আসনের বিজেপি (BJP) প্রার্থী শিখা চট্টোপাধ্যায়(Sikha Chatterjee) বুঝে যান তিনি ‘একা’। দলের সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল। কোনও কাজের দায়িত্ব দেওয়ার মতো নেতা তাঁর হাতে নেই। তাই যেকোনও সমস্যায় তাঁকেই ছুটতে হবে।
এই আসনে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ফুলবাড়ির বাদলাগছের একটি বুথে সকাল সকাল বিজেপির এজেন্টকে বসতে না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সাময়িক উত্তেজনা দেখা দেয়। কিন্তু, পোলিং অফিসার জানিয়ে দেন, যে ব্যক্তিকে এই বুথের এজেন্ট করেছিল বিজেপি, তিনি নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মতো তিন নম্বর ফর্ম পূরণ করেননি। তাই তাঁকে বসতে দেওয়া হয়নি। এ খবর পেয়ে অন্য বুথ থেকে এজেন্ট নিয়ে বাদলাগছের বুথে ছোটেন শিখাদেবী। যদিও এ ঘটনাকে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের ষড়যন্ত্র বলেছেন। এ খবর পেয়ে এই আসনের তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেবও বাদলাগছে পৌঁছে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখে তিনি ফিরে আসেন। আর এ ঘটনায় তিনি বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ওদের কোথাও কোনও লোক নেই। সেজন্যই এজেন্ট খুঁজে পায়নি। আর এমনটা যে হবে, সেটা জেনেই নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে বিজেপি এবার নতুন নিয়ম করিয়েছে। সেটা হল, সংশ্লিষ্ট বিধানসভা আসনের বাসিন্দা এমন ব্যক্তিকে সেই কেন্দ্রের যেকোনও বুথের এজেন্ট করা যাবে। কিন্তু, তাতেও ওরা সব বুথে এজেন্ট জোগাড় করতে পারেনি। তাঁর খোঁচা, লোক নেই, আমাদের সেটা জানালে আমরাই লোক দিয়ে দিতাম।
এখানেই শেষ নয়। বেলা যত গড়িয়েছে, ততই দেখা যায় বিজেপি প্রার্থীর পাশে নেই দলের নেতা-কর্মীরা। সকাল ১১টা নাগাদ ঠাকুরনগরের একটি বুথে বিজেপির এক কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে নির্বাচন বিধি ভেঙে তিনি বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে ভোটার স্লিপ বিলি করছেন। অভিযোগ পেয়ে এনজেপি থানার পুলিস তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে এক্ষেত্রেও থানায় ছুটতে হয় শিখাদেবীকে। থানায় দু’ঘণ্টা বসে থেকে সেই কর্মীকে তিনি ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। এখানেও তিনি তৃণমূলের ষড়যন্ত্র দেখছেন।
আবার কোনও বুথে আলো অপ্রতুল, ইভিএম দেখতে ভোটারদের অসুবিধা হচ্ছে শুনে সেখানে মোমবাতি নিয়ে ছোটেন বিজেপি প্রার্থী। তবে ভোটের দিন মূল্যবান দু’ঘণ্টা সময় একজন প্রার্থীর থানায় বসে ‘নষ্ট’ করা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কথায়, ভোট করানোর জন্য প্রার্থীকে সর্বত্র ঘুরে বেড়াতে হয়। সেখানে একজন সাধারণ কর্মীকে ছাড়ানোর জন্য প্রার্থী কেন দু’ঘণ্টা থানায় বসে থাকবেন। দলীয় নেতৃত্ব এসব দিক সামলাবে। এতে বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতাই প্রমাণ হয়। এদিন ভোট নিয়ে একেঅপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছে। কিন্তু, কেউ ভোটারদের করোনা বিধি লঙ্ঘন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি।