দেশে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধিতে মন্দার হাতছানি
মঙ্গলবার দেশে লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩ মে করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে, আশার বাণী এই যে ২০ এপ্রিলের পর অঞ্চল বিশেষে এই লকডাউন শিথিল করা হতে পারে। অর্থাৎ, ২০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন যেমন চলছে তেমনিই চলবে।
এই বর্ধিত লকডাউনের ফলে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার শূণ্যে নেমে আসতে পারে বলে এ দিন পূর্বাভাস দিয়েছে ব্রিটিশ সংস্থা বার্কলেজ। এর আগে সংস্থাটি জানিয়েছিল, চলতি ক্যালেন্ডার বছরে ভারতের জিডিপি ২.৫ শতাংশ বাড়তে পারে।
এই প্রথম কোনও সংস্থা চলতি বছরে ভারতের জিডিপি বাড়বে না বলে পূর্বাভাস দিল। বার্কলেজের মতে, লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর (৩ মে) ফলে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আগে যতটা খারাপ হবে ভাবা হয়েছিল তার থেকেও খারাপ হবে। ‘আমাদের অনুমান, গোটা মে মাস জুড়েই দেশে আংশিক লকডাউন বহাল থাকবে এবং সেটা হলে ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২৩,৪৪০ কোটি মার্কিন ডলার বা জিডিপির ৮.১ শতাংশ,’ রিপোর্টে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণার পর সকলের চোখ এখন কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার দিকে। তৃণমূল কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অর্থনীতিবিদদের মতে, ভারতীয় অর্থনীতিকে টেনে তুলতে মোদী সরকারের দ্রুত ১০ লক্ষ কোটি টাকার (জিডিপির ৫-৬ শতাংশ) প্যাকেজ ঘোষণা করা উচিত।
ওই প্যাকেজ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ দিন কোনও উচ্চবাচ্য না করায় অনেকেই মনে করছেন, আগে সরকার যে শিল্পক্ষেত্র ভিত্তিক আর্থিক সুবিধা দেওয়ার চিন্তা করছিল তা থেকে সরে এসে একটি ঢালাও আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে।
এ দিনই আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ) জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে ভারতের জিডিপি মাত্র ১.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। উল্লেখ্য, ১৯৯১-এর পর অর্থনীতির এতটা কম বৃদ্ধি আগে কখনোও দেখা যায়নি। আইএমএফের মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ অবশ্য মনে করেন, ‘গোটা বিশ্ব অর্থনীতি যেখানে ৩ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে সেখানে ভারতীয় অর্থনীতির এই বৃদ্ধি, সামান্য হলেও হতাশাজনক নয়।’
তবে, তাঁর মতে, ‘করোনা মহামারী রুখতে যে উৎপাদন, কর্মসংস্থান আমাদের হারাতে হবে তা ২০০৮-০৯ সালের আর্থিক সঙ্কটের তুলনায় অনেক বেশি।’