বিপুল ঋণের বোঝা, মাথায় হাত চৈত্র সেলের ব্যবসায়ীদের
চৈত্র সেল ও নববর্ষের সময় বারাসতের চাঁপাডালি মোড় থেকে কলোনি মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে ফুটপাথে জমাটি বিকিকিনি হয়। সেখানেই সমর বৈদ্য রেডিমেড গার্মেন্টস বিক্রি করেন। আম বাঙালি চৈত্র সেলে জমিয়ে বাজার করে। তাই সমরের মতো বহু মানুষ এই সময়ে ধার নিয়ে হরি সাহার হাট, মঙ্গলার হাট, মেটিয়াবুরুজের হাট থেকে জামা কাপড় কিনে পসরা সাজায়।
করোনাভাইরাসের জেরে লকডাউনের ধাক্কায় এ বছর নববর্ষে সমরের মতো বহু মানুষ একেবারে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। লকডাউন উঠলেও আসছে ঈদের বাজার আদৌ জমবে কিনা স্পষ্ট নয়। ফলে সেই পুজোর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। তদ্দিন চলবে কী করে?
করোনার আঘাতে চরম অনিশ্চয়তার মুখে রেডিমেড গার্মেন্টস শিল্পের সঙ্গে জড়িত লক্ষ লক্ষ মানুষ। অনেকের মাথার উপর দেনার বোঝা চেপে বসেছে। এই বাজারগুলোতে যারা পাইকারি হারে মাল বিক্রি করেন, তেমন প্রায় দেড় লক্ষ ব্যবসায়ী দর্জি ও ওস্তাগরদের দিয়ে এই রেডিমেড গার্মেন্টস তৈরি করেন। এই ব্যবসায়ীদের নীচে ১০-১২ লক্ষ কারিগর ও ওস্তাগর রয়েছে। চৈত্র সেল ও নববর্ষের দিকে তাকিয়ে এই ব্যবসায়ীরা আবার বাড়তি রেডিমেড গার্মেন্টস তৈরি করান। তার জন্য ব্যবসায়ীদের অনেকে এই সময় ৬-১০ শতাংশ সুদে টাকা ধার নেন।
মেটিয়াবুরুজের আব্দুল মোল্লার কথায়, ‘লাখ লাখ টাকার মাল রেডি হয়ে পড়ে রয়েছে। চৈত্র সেল ও নববর্ষের বাজার হল না। যা পরিস্থিতি, ঈদের বাজার কতটা জমবে সন্দেহ আছে। এই স্টক কবে শেষ হবে কেউই জানে না। এই যে লোকসান হল, পুজোর জামাকাপড় তৈরির অর্ডার দেওয়ার টাকা থাকবে না। দর্জিদের কোনও কাজ থাকবে না।’
ওয়েস্ট বেঙ্গল টেলার্স ইউনিয়নের সম্পাদক আশাদুললা গায়েনের কথায়, ‘চৈত্র সেলে একটু সস্তায় জিনিস পাওয়া যাবে এই আশায় সাধারণ মানুষ প্রচুর ভিড় করেন। এই সময় খুব ভালো ব্যবসা হয় বলে একেবারে প্রান্তিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও ধারদেনা করে একটু বেশি মাল তোলেন। নোটবন্দি, জিএসটি-র জেরে এই শিল্প সঙ্কটে ছিল, এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হল, ধার শোধ করতে বহু মানুষ শেষ হয়ে যাবে। আমরা চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চাইব।’