করোনার জেরে ১০০ লোকাল বাতিল হাওড়া ও শিয়ালদহে
করোনার (Corona) জেরে বুধবার হাওড়া (Howrah) এবং শিয়ালদহ (Sealdah) শাখায় প্রায় শ’খানেক লোকাল ট্রেন (Local Train) বাতিল করা হল। লাগামছাড়া সংক্রমণের জেরে দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই দুটি ডিভিশনে কয়েকদিন ধরেই লোকাল ট্রেন বাতিল করা হচ্ছিল। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত দূরপাল্লার কোনও ট্রেন বাতিল করা হয়নি। এদিকে, পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ দিকে যেতে পারে বলে রেল কর্তাদের একাংশের আশঙ্কা। জানা গিয়েছে, হাওড়া এবং শিয়ালদহ শাখার ১৭৫ জন গার্ড এবং ট্রেন চালক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি যে দিকে এগচ্ছে, তাতে আগামী দিনে বাতিল ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্তত এমনটাই দাবি করেছে রেল কর্তাদের একাংশ।
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহ ধরে এই চিত্র চলছে পূর্ব রেলের এই দুই ব্যস্ততম ডিভিশনে। বুধবার শিয়ালদহ ডিভিশনে প্রায় ৬৬ ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে, হাওড়া ডিভিশনে বাতিল হওয়ার ট্রেনের সংখ্যা ৩৪। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, লোকাল ট্রেন বাতিল করা হলেও, এখনই দূরপাল্লার কোনও ট্রেন বাতিলের পরিকল্পনা নেই। যদিও রেল কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গিয়েছে। কারণ কম কর্মী নিয়ে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে তাঁদের অতিরিক্ত ডিউটি করতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি। অন্যদিকে, বুধবার থেকেই শিয়ালদহ, ফেয়ারলি প্লেস সহ রেলের একাধিক অফিসে কর্মীদের হাজিরা ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। রেল কর্তাদের বক্তব্য, দিনের ব্যস্ত সময় বাদ দিয়ে স্বল্প দৈর্ঘ্যের বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করে পরিষেবা অটুট রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু সংক্রমণের হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী সপ্তাহে এই পরিষেবা কতটা স্বাভাবিক থাকবে, তা নিয়ে সন্দিহান সংশ্লিষ্ট মহল।
এদিকে, এই বিপুল সংখ্যক লোকাল ট্রেন বাতিল হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার যে বার্তা রেলের তরফে দেওয়া হচ্ছে, তা এই সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। কারণ লোকাল ট্রেন বাতিল হওয়ায় পরবর্তী ট্রেনগুলিতে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হচ্ছে। যার জেরে শিকেয় উঠেছে করোনা বিধি পালনের যাবতীয় নিয়ম-কানুন। এই পরিস্থিতিতে রেলকর্তারা যাত্রীদের উদ্দেশে আবেদন রেখেছেন। রেলের বক্তব্য, খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রেলযাত্রা এড়িয়ে চলুন। কিন্তু বেসরকারি অফিস, আদালত সহ একাধিক প্রতিষ্ঠান পুরোদস্তুর স্বাভাবিক থাকায় যাত্রী সংখ্যায় খুব একটা কমেনি। এহেন পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রেখে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে ভারতীয় রেলের আধিকারিকরা এখন রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।