রাজ্যের সব চটকল চালু করতে চলেছে বাংলা
মাঠ থেকে রবিশস্য উঠছে। শুরু হচ্ছে ধান সংগ্রহ। এই অবস্থায় খাদ্যশস্য প্যাকেজিংয়ের জন্য প্রয়োজন চটের ব্যাগের। কেন্দ্রীয় সরকার ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারের অনুরোধে লকডাউনের মধ্যেই আপৎকালীন ব্যবস্থায় জুটমিল চালু করতে উদ্যোগী হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্যের ১৮টি জুটমিল বা চটকল এখনই চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা তিনি মানতে নারাজ।
মমতার সাফ কথা, ‘এই ব্যাপারে রাজ্য সরকার কোনও বৈষম্য করবে না। ১৫ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে সব জুটমিল চালু করতে হবে।’ এই নিয়ে জুটমিল ইউনিয়নের নেতৃত্বের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেছেন ।
রাজ্যে এই মুহূর্তে চটকলের সংখ্যা ৫৯। এর মধ্যে পাঁচটি বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন কারণে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি রাজ্যের ১৮টি চটকল চালু করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দেন।
সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘কেন ১৮ জুটমিল? খুলতে হলে সব জুটমিল খোলা হবে। এমনিতেই জুটমিল শ্রমিকরা লকডাউনের জন্য মজুরি পাচ্ছে ননা। আমাকে ক’দিন আগে জুটব্যাগের সমস্যা নিয়ে পাঞ্জাব ও তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীও ফোন করেছিলেন।’
মমতা বলেন, ‘মাঠ থেকে খাদ্যশস্য উঠছে। প্যাকেজিংয়ের জন্য চটের বস্তা দরকার। জুটমিলগুলো এখন না-খুললে চটের বস্তার অর্ডার পাবে না। প্লাস্টিক বস্তা জায়গা করে নেবে। তাই, নানা দিক বিচার করে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে জুটমিল চালু করতে বলছি।’
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও জীবিকা রক্ষা করে জুটমিলগুলো চালু করতে হবে। শ্রমিকদের মাস্ক, স্যানিটাইজার দিতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁরা যাতে কাজ করতে পারেন, সেটা দেখতে হবে। রাজ্য সরকারও এই ব্যাপারে মনিটরিং রাখবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে লিখেছেন, চটকল মোট শ্রমিকদের ২৫ শতাংশের বেশি একসঙ্গে কাজ করতে পারবেন না। রস্টারের ভিত্তিতে তাঁদের কাজ দিতে হবে। কোনও ভাবেই জুটমিলে কোভিড-নাইনটিন সংক্রমণের মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকা অমান্য করা যাবে না। প্রতিটি চটকলে জুট কমিশনারের একজন প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে নিয়ম মেনে কিছু নজরদারি চালাতে হবে।