সব বেসরকারি হাসপাতালে ৬০ শতাংশ কোভিড-বেড সংরক্ষণের নির্দেশ রাজ্যের
বাড়ছে করোনার (Covid 19) প্রকোপ। একটি বেডের জন্য চাতকের মতো অপেক্ষায় শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। এই পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালের শয্যা বাড়ানোর পাশাপাশি রাজ্যের সব বেসরকারি হাসপাতালে ৬০ শতাংশ কোভিড বেড সংরক্ষণের নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য কমিশন। বাকি ৪০ শতাংশ শয্যায় ডায়ালিসিস ও ইমার্জেন্সি সহ নন করোনা পরিষেবা দেওয়া যেতে পারে। একইসঙ্গে রাজ্যের হেল্পলাইন পরিষেবাতেও জোর দিচ্ছে রাজ্য। কারণ, স্বাস্থ্যদপ্তরের ইন্টিগ্রেটেড হেল্পলাইন (১৮০০৩১৩৪৪৪২২২) ও টেলিমেডিসিন (০৩৩২৩৫৭৬০০১) নম্বরে অসহায় মানুষের ফোন বাড়ছে। প্রতি ৬০ মিনিটে ৬৫০-৭০০ করে ফোন আসছে। এতদিন ফোন লাইন ছিল ১২০টি। বিপদে বহু মানুষ ফোন পাচ্ছেন না। লাগাতার ফোন ‘ব্যস্ত’ থাকছে। এমন সব অভিযোগ উঠছে দেখে শনিবার একসঙ্গে ১৮০টি ফোন ধরার ব্যবস্থা করল রাজ্য। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী বাড়ির ইন্টিগ্রেটেড হেল্পলাইন কলসেন্টার, আইটি শাখার দোতলার করোনা সংক্রান্ত প্রশ্নের কলসেন্টার, পিজি হাসপাতালের টেলিমেডিসিন সেন্টার রয়েছে। এসএসকেএম হাসপাতালে তিন শিফটে ফোন লাইনের সংখ্যা বাড়িয়ে ৩৬, ৩৬ ও ২০টি করা হয়েছে।
এদিকে, করোনা রিপোর্ট আসার আগেই বাড়িতে মৃত্যুর একাধিক ঘটনায় মৃত প্রিয়জনের সৎকার নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন বহু মানুষ। সেজন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ ধরনের ঘটনায় যাঁর অধীনে চিকিৎসা চলছিল, সেই চিকিৎসক ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারবেন। অনলাইন মাধ্যমেও এই কাজ করা যাবে। যদিও অনলাইনে মৃত্যু ঘোষণা আদৌ সম্ভব কি না, ইতিমধ্যেই তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ওই নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, এক কোভিড হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পথে মৃত্যু হলে, যে হাসপাতালের ডাক্তার রোগীকে রেফার করছেন, তিনি ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারবেন। সৎকার কার্যের জন্য পুর এলাকার হেলথ অফিসার, গ্রামীণ এলাকায় বিডিও বা বিএমওএইচ এবং কলকাতায় সিএইচএমও’র সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এদিন বাংলায় দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ২৮১। মারা গিয়েছেন ৫৯ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করে জানান, রাজ্যগুলিতে ১ মে থেকে ১৮-৪৫ বছরের টিকাকরণ শুধুমাত্র অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে করতে হবে। যদিও ইন্টারনেটে স্বচ্ছন্দ নন, এমন বহু মানুষ এতে সমস্যায় পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।
বেডের আকাল মোকাবিলায় এদিন রাজ্য কোভিড আক্রান্তদের ছুটির নয়া নির্দেশিকা প্রকাশ করে জানিয়েছে—১) মৃদু উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসার শেষ তিনদিন অক্সিজেন না লাগলে তাঁরা বাড়িতে থাকতে পারবেন। উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর ১৭ দিন পর্যন্ত। যদিও এ ধরনের ষাটোর্ধ্ব রোগীরা (একাধিক কো-মরবিডিটি থাকলে) হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১০ দিনের চিকিৎসা সম্পূর্ণ করবেন। ২) মাঝারি উপসর্গ থাকা রোগীরা শেষ তিনদিন বাইরে থেকে অক্সিজেন ছাড়াই ৯৫ শতাংশের বেশি অক্সিজেন মাত্রা বজায় রাখতে পারলে সেফ হোমে থাকবেন। সেক্ষেত্রে ১০ দিনের পর ছুটি। ৩) সমস্যা মারাত্মক বাড়লে করোনা রোগীকে ১০ দিন পর করোনার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার চিকিৎসার জন্য নন করোনা হাসপাতালে পাঠানো হবে।
রেমডিসিভিরের আকাল রুখতে এক নির্দেশে এদিন রাজ্য জানায়, মাত্র ১০-২০ শতাংশ আক্রান্তের এই ওষুধ লাগতে পারে। এরপর থেকে কোনও হাসপাতাল রোগীর বাড়ির লোককে রেমডিসিভির কেনার জন্য প্রেসক্রিপশনে লিখতে পারবে না। কিনবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালই।