করোনাকালে ফের বেসামাল ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসা
নির্বাচনের জন্য এমনিতেই পর্যটন ব্যবসা ঢিমেতালে চলছিল। তবে তাতে তেমন সমস্যা হয়নি পর্যটন ব্যবসায়ীদের। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হতেই মে মাসের সমস্ত বুকিং বাতিল করছেন পর্যটকরা। এ ঘটনায় লাটাগুড়ি, ধূপঝোরা ও ডুয়ার্স (Dooars) সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত কয়েক হাজার পর্যটন ব্যবসায়ীর মাথায় হাত পড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর লকডাউন (Lockdown) ও করোনা (Covid 19) পরিস্থিতির জেরে পর্যটন ব্যবসায়ীদের বিপুল ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু মাঝখানে করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় পর্যটকরা আসা শুরু করেছিলেন। এরপর শুরু হয় নির্বাচন প্রক্রিয়া। তাতে ফের ভাটা পড়ে পর্যটন ব্যবসায়। তবুও মে মাসের জন্য সমস্ত এলাকাতেই রিসর্টগুলিতে প্রায় ৫০ শতাংশ বুকিং হয়েছিল। কিন্তু এর মাঝেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী মাল পুরসভা এলাকাতেই আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। প্রতিদিনই রাজ্যে হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। ফলে নতুন করে আর কোনও পর্যটক বুকিং করছেন না। বরং যাঁরা বুকিং করেছিলেন, তাঁরাও বাতিল করে দিয়েছেন। লাটাগুড়ির দু’টি বেসরকারি রিসর্টের মালিক মিঠু মুখোপাধ্যায় ও জিয়াউর রহমান এবং সুনতালেখোলার এক হোম স্টের মালিক দীপক রাহা বলেন, গত বছর লকডাউনের জেরে আমাদের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু মাঝে করোনার প্রকোপ কমায় আশায় বুক বেঁধেছিলাম। এমনকী পর্যটকরাও আসতে শুরু করেছিলেন। এরপর নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হতেই ব্যবসায় ফের ভাটা পড়ে। কিন্তু মে মাসের জন্য রিসর্টগুলিতে বুকিং শুরু হয়েছিল। তবে এখন করোনার জন্য আবার বুকিং বাতিল হচ্ছে। লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব ও গোরুমারা ট্যুরিজম ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাজমুল হক বলেন, করোনার জেরে এর আগেও আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তাছাড়া লাটাগুড়ি, ধূপঝোরা ও ডুয়ার্স সংলগ্ন পাহাড়ের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত কয়েক হাজার পর্যটন ব্যবসায়ীর মাথায় হাত পড়েছে। এখন ব্যবসা করা দূরে থাক, রিসর্টের স্টাফদের আমরা মাইনে দেব কী করে জানি না। আর স্
টাফরা যদি না থাকেন, তাহলে হোটেল, রিসর্ট রক্ষা করাটাই আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এই অসময় সরকার যদি পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো পর্যটন ব্যবসা শেষ হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, লাটাগুড়িতে ৪৫টি ও ধূপঝোরাতে ৪২টি রিসর্ট রয়েছে। এছাড়াও ডুয়ার্স সংলগ্ন পাহাড় সামসিং, সুনতালেখোলা, রকি আইল্যান্ড, মণ্ডলগাঁও, ঝালং, বিন্দু, প্যারন, তোদে তানতা, দলগাঁও, কুমাই, এই সমস্ত এলাকায় প্রচুর হোম স্টে রয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা পর্যটন ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। এ সমস্ত এলাকায় গাড়ি, দোকান, হোটেল ব্যবসায়ী, এমনকী সাফারির সঙ্গে থাকা বহু গাইড সহ বহু মানুষ বিপদের মুখে।