রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

নজরবন্দি থাকলেও খেলা হবে: অনুব্রত

April 28, 2021 | 2 min read

অবশেষে জল্পনাই সত্যি হল! ভোটে প্রভাব খাটানোর আশঙ্কায় দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) নজরবন্দি করল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে ৩০ এপ্রিল সকাল ৭টা পর্যন্ত ৬০ ঘণ্টার জন্য তাঁকে নজরবন্দি করা হয়েছে। যদিও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় অনুব্রতবাবু এদিন জানিয়ে দিয়েছেন, নজরবন্দিতে তাঁর কিছু এসে যায় না। খেলা হবে।

এর আগে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন ও ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে নজরবন্দি করেছিল নির্বাচন কমিশন। ঠিক একইভাবে এবারও তাঁকে নজরবন্দি করা হবে, এমন গুঞ্জন চলছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। সেই গুঞ্জনই সত্যি প্রমাণ করে এদিন বিকেল ৫টা থেকে তাঁকে নজরবন্দি করা হয়। তিনি তখন বোলপুরের পার্টি অফিসেই ছিলেন। প্রতিবার প্রচার শেষে ভোটের আগের দিন তিনি তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিতে যান। কিন্তু এবার শারীরিক অসুস্থতার জন্য মন্দিরে পুজো দিতে যাননি। সকাল থেকে বাড়িতে ছিলেন। দুপুরের পর তিনি পার্টি অফিসে আসেন। সেখানে বসে ফোনে কর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছিলেন। বিকেলে তাঁকে নজরবন্দি করার নির্দেশ জারি করে নির্বাচন কমিশন। যদিও তিনি হাতে এসংক্রান্ত কোনও কাগজ পাননি বলে জানান।

অনুব্রতবাবু বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভালো লেগেছে তাই আমাকে নজরবন্দি করেছেন। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। কেন করেছে তা আমি বলতে পারব না। তবে আমি আমার কাজ করে যাব। নজরবন্দি করলেও খেলা বন্ধ হবে না, খেলা যেমন চলছিল তেমনই চলবে। নজরবন্দি করলে আদালতে যাওয়ার কথা বলেছিলেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি দলের কর্মী মাত্র। এবিষয়ে দলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে নজরবন্দি করেছে মানে এমন নয় যে আমাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। আমার যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাব।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ নির্বাচন কমিশনের তরফে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং তাঁর সঙ্গে আটজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান আসেন। তাঁরা তৃণমূল পার্টি অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে পড়েন। তাঁদের সঙ্গে একজন ভিডিও ফটোগ্রাফার ছিলেন। তিনি পুরো বিষয়টি ভিডিওগ্রাফি করেন। গত দু’টি লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে অনুব্রত মণ্ডলের ছায়াসঙ্গী হয়েছিলেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। জমা নেওয়া হয়েছিল তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল। কিন্তু তাঁকে যে দমিয়ে রাখা যায়নি, তার প্রমাণ পাওয়া যায় ফলাফলেই।

তবে প্রতিবার নির্বাচনের প্রচার শেষে মা তারার পুজো দিতে যান তিনি। এবার অসুস্থতার জন্য সেই রুটিনে ছেদ পড়ল। ইতমধ্যেই করোনা টেস্ট করিয়েছেন। রিপোর্ট পজিটিভ হলে নির্বাচনের দিন বাড়িতেই কন্ট্রোল রুম খুলে ভোটে নজরদারি চালাবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, অন্য কোনও দলকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না। অনুব্রতবাবু বলেন, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা লেগেছে। তিনদিন ধরে খুব কাশি হচ্ছে। প্রচুর কফ উঠছে। অনেকেই সন্দেহ করছেন করোনা হয়েছে। তাই টেস্ট করালাম। কাল কিংবা পরশু রিপোর্ট পাব। মঙ্গলবার তারাপীঠে পুজো দেব ভেবেছিলাম, কিন্তু যেহেতু শরীর খারাপ, তাই যাওয়া ঠিক হবে না বলে যাইনি। আমি জানি, মা তারা আমার সঙ্গে রয়েছেন।

বীরভূমে নির্বাচন মানেই যাঁর নাম সংবাদ শিরোনামে থাকে, তিনি জেলা তৃণমূল সভাপতি। কখনও চড়াম চড়াম, কখনও গুড় বাতাসা, নকুলদানার দাওয়াই তো আবার কখনও খেলা হবে, এমন নানা শব্দবন্ধ শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। এনিয়ে সমালোচনা হলেও তিনি নির্বিকার। আগামী ২৯এপ্রিল জেলার ১১টি বিধানসভা আসনে ভোট। এই জেলাকে কার্যত পাখির চোখ করেছে বিজেপি। অনুব্রতবাবুও সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে দলকে জেতাতে মরিয়া।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal Assembly Elections 2021, #Anubrata Mandal

আরো দেখুন