ভুয়ো করোনা রিপোর্ট বানানোর কারবার, হাওড়ায় ধৃত ২
জরুরি প্রয়োজনে আপনি ভিন রাজ্যে যাবেন? বিমানে ওঠার আগে দরকার করোনা (COVID19)পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট? আরটিপিসিআর (RTPCR) পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষার(Covid Test) ফলাফল আসতে তো দিন দু’য়েক সময় লাগবেই। তাহলে উপায় কী? সেই ‘উপায়’ বের করে গত ক’দিন ধরে রমরমা কারবার চালাচ্ছিল হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের ল্যাবরেটরির দু’জন কর্মী। শেষমেশ ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিস বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।
তাদের নাম অভিজিৎ মাইতি ও অমিত লাহা। বৃহস্পতিবার তাদের হাওড়া আদালতে তোলা হয়। বিচারক অভিজিৎকে তিনদিনের এবং অমিতকে সাতদিন পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন হাওড়া সিটি পুলিস সূত্রে এই চাঞ্চল্যকর খবর জানা গিয়েছে।
পুলিস ও হাসপাতাল সূত্রের আরও খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই এই কারবার চালাচ্ছিল তারা। করোনা পরিস্থিতিতে কিছু নির্দিষ্ট জায়গায় যেতে গেলে বা বিমানে চাপতে গেলে যেমন নেগেটিভ রিপোর্টের দরকার পড়ছে, তেমনি কেউ কেউ কর্মস্থলে ফাঁকি দিয়ে ছুটি বাগাতে বা আরও কোনও অসাধু উদ্দেশ্যে পজিটিভ রিপোর্টও খুঁজছেন। অভিযোগ, এরকম লোকজনকে ধৃত এই দু’জন মোটা টাকার বিনিময়ে কোনও ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা ছাড়াই প্রয়োজনমতো রিপোর্ট বানিয়ে দিত। মেল ও এসএমএসের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত রিপোর্ট পৌঁছে যেত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে। বিষয়টি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসামাত্রই তারা গোলাবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
পুলিস হাওড়া থেকে পরপর দু’দিনে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় অভিজিৎকে। তাকে জেরার ভিত্তিতে অমিত ধরা পড়ে। হাওড়া সিটি পুলিসের এক পদস্থ কর্তা জানান, এভাবে কতজনকে তারা ভুয়ো রিপোর্ট দিয়েছে, তা জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে। যারা ইতিমধ্যেই নিজেদের পছন্দমতো রিপোর্ট করিয়েছেন এদের কাছ থেকে, সেরকম কয়েকজনকে থানায় ডেকে এদিন পুলিস জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ওই ভুয়ো রিপোর্ট দেখিয়ে তারা কোথায় কোথায় কী ধরনের অন্যায্য সুবিধা নিয়েছে, সেসবও দেখছেন তদন্তকারীরা। হাওড়া শহরে বা অন্যত্রও এই ধরনের জালিয়াতি কারবার আর কেউ করছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিস। ইতিমধ্যেই কলকাতা ও নদীয়ায় এরকম কিছু ভুয়ো রিপোর্টের কারবারের খবর পুলিস পেয়েছে। এসব বন্ধ করতেই তৎপর তারা। উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে এভাবে টাকার বিনিময়ে ভুয়ো রিপোর্ট বানিয়ে দেওয়ার খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের অন্দরে।