ভোট মিটতেই ঘরে ফেরার জন্য তলে তলে যোগাযোগ দলবদলুদের
ভোটের আগে একটা সময়ে ব্যারাকপুরে শিল্পাঞ্চলে দলবদল প্রায় রোজকার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু ভোটের ফল বেরোতেই দেখা গেল, তাতে তৃণমূলের ক্ষতি তো কিছু হয়ইনি, উল্টে ভোটারদের আশীর্বাদই পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল। ঘটনা হলো, গেরুয়া শিবিরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে দলবদলুদের অনেকেই এখন আফশোস করছেন। অনেকে ফিরতে চেয়ে তলে তলে দলের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন। নিচুতলার তৃণমূল কর্মীদের অবশ্য বক্তব্য, ‘গদ্দারদের ছাড়াই জিতেছি। ওদের মানুষ চায় না। দলনেত্রী মানুষের ইচ্ছেকেই মর্যাদা দেবেন।’
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের কয়েকমাস আগেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে দলবদলের খেলা শুরু। মুকুল রায়, অর্জুন সিং একে একে বিজেপিতে গিয়ে নাম লেখান। থেকেই শুরু হয়েছিল শিল্পাঞ্চলে দলবদলের খেলা। প্রথমে মুকুল রায়, তারপর একেবারে ভোটের মুখে দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে সাংসদ হয়েছেন অর্জুন সিং। গোটা এলাকায় সে সময়ে এই দু’জনের প্রভাব ছিল বিস্তর। একে একে কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি, ভাটপাড়া পুরসভায় কাউন্সিলরদের মধ্যে ভাঙন ধরিয়ে দখল নিতে পেরেছিল বিজেপি। যদিও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। তৃণমূল পুরসভাগুলি ফিরিয়ে নেয়। দলবদল ঘটেছিল গারুলিয়া পুরসভাতেও।
এর পর মাঝে কয়েক মাসের বিরতি। বিধানসভা ভোটের আগে ফের দলবদলের হিড়িক লেগে যায়। ওই তালিকায় তৃণমূল থেকে গিয়ে বীজপুরে শুভ্রাংশু রায় যেমন বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন, তেমনই নোয়াপাড়ায় সুনীল সিং, খড়দহে শীলভদ্র দত্ত এবং পানিহাটিতে কংগ্রেস থেকে গিয়ে বিজেপির প্রার্থী হন সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। এতে বিজেপিতে আরও তেড়েফুঁড়ে প্রচারে নেমে পড়ে। নেতাদের মুখে হামেশাই শোনা যেত, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সব আসনে জয় পাকা।
আশা করাই সার। দেখা গেল দলবদলুরা সকলে হেরেছেন। এবং হারের ব্যবধানও বেশ ভালো। মুকুল বা অর্জুন ম্যাজিক কাজ করেনি। ফল প্রকাশের দিনই নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেছিলেন, ‘কিছু গদ্দার ভোটের আগে দলবদল করে দলকে বিপাকে ফেলবে ভেবেছিল। কিন্তু আমাদের কর্মীরা সকলেই জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই দিয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছেন।’