শীতলকুচি তদন্তে অসহযোগিতা করছে সিআইএসএফ

সিআইএসএফ সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছেন। তাদের বক্তব্য, সিআইএসএফ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। তাই অন্য কোনও সংস্থা জেরার জন্য ডাকলে, সেখানে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্ত্রকের অনুমতি লাগে।

May 12, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

শীতলকুচি (Sitalkuchi) কাণ্ডে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফের আধিকারিক ও জওয়ানরা সিআইডির জেরা এড়িয়ে গেলেন। মঙ্গলবার তাঁদের জন্য ভবানী ভবনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন তদন্তকারী অফিসাররা। হাজিরা দূর অস্ত… কেন এলেন না, বা কবে আসবেন, তা নিয়ে জওয়ানদের তরফে কোনও বার্তা পাঠানো হয়নি। সিআইএসএফের শীর্ষ কর্তাদের তরফেও সিআইডির সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর এই অসহযোগিতায় রীতিমতো অসন্তুষ্ট আধিকারিকরা। হাজিরা দেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে ফের নোটিস যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে আজ, বুধবার মাথাভাঙার এসডিওকে নোটিস পাঠিয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। নোটিস পাঠানো হয়েছে কোচবিহারের তদানীন্তন পুলিস সুপার দেবাশিস ধরকেও। এই আবর্তেই আগামী কাল, বৃহস্পতিবার শীতলকুচি পরিদর্শনে যাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। গত ১০ এপ্রিল চতুর্থ দফার ভোটে শীতলকুচির আমতলি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের বুথে সিআইএসএফ জওয়ানদের ছোড়া গুলিতে চার গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছিল।

শীতলকুচিতে বুথের সামনে গুলি চালানোর ঘটনায় সিআইএসএফ (CISF) জওয়ান ও তাঁদের অফিসারদের বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, গুলি চালানো নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার সময় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী এবং এবং ঘটনাস্থলে যাওয়া অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারী অফিসাররা বুঝতে পারছেন, গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি সেখানে ছিল না। গুলি চালানোর আগে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা, বা গোলমালে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছিল, তাদের চিহ্নিত করে সতর্ক করে ‘সরিয়ে দেওয়া’—এর কোনওটাই করেনি কেন্দ্রীয় বাহিনী। তদন্তে উঠে আসছে, গোলমালের সময় কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা গুলি চালিয়ে দেন। তার আগে স্থানীয় পুলিসের সঙ্গে আলোচনা তাঁরা করেননি বলে অভিযোগ। এই কারণেই ওই দিন শীতলকুচির বুথে ডিউটিতে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর ছ’জনকে ডেকে পাঠানো হয়। কোভিডের দোহাই দিয়ে তাঁরা ভার্চুয়াল জেরা চেয়ে সিআইডি অফিসারদের এড়ানোর চেষ্টা করেন। তদন্তকারী সংস্থা তাঁদের এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। সকলকে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় আসতে বলা হয়। কিন্তু না এসে তাঁরা বস্তুত তদন্তে অসহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ সিআইডির। গোয়েন্দা সংস্থার অফিসারদের ব্যাখ্যা, আসলে তাঁদের জেরা করলে আরও অনেকের নাম উঠে আসবে। সেই সঙ্গে পাল্টা প্রশ্ন করা হবে, যদি আক্রমণই করা হয়, তাহলে তাঁদের তরফে কেউ আঘাত পেলেন না কেন? সামান্য আহত হলেও কোন সরকারি হাসপাতালে তাঁরা চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন, তার নথি চাওয়া হবে। যে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ, সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে কেন থানায় জমা দেওয়া হল না—জানতে চাওয়া হবে তাও। যার ব্যাখ্যা, বা কোনও নথি বাহিনীর জওয়ানরা দিতে পারবেন না বলে মনে করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। আর তাই তাঁরা হাজির হননি। তিনবার নোটিসের পরেও যদি কেউ না আসেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হবেন অফিসাররা। আদালত নির্দেশ দিলে তাঁরা হাজিরা দিতে বাধ্য থাকবেন।

সিআইএসএফ সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছেন। তাদের বক্তব্য, সিআইএসএফ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। তাই অন্য কোনও সংস্থা জেরার জন্য ডাকলে, সেখানে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্ত্রকের অনুমতি লাগে। এরই সঙ্গে জেলার তদানীন্তন এসপি ঘটনার যা বর্ণনা করেছিলেন, তার উল্লেখ রিপোর্টে কেন ছিল না, সেটাও জেরাপর্বে জানতে চাওয়া হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen