কলকাতার পর এবার শিলিগুড়িতে ‘টক টু চেয়ারম্যান’
কলকাতা পুরসভার মত শিলিগুড়িতেও (Siliguri) চালু হচ্ছে ‘টক টু চেয়ারম্যান’ (Talk to Chairman)। পুর পরিষেবা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা নিয়ে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যানের কাছে সরাসরি টেলিফোনে আবেদন করতে পারবেন শিলিগুড়ি করপোরেশনের বাসিন্দারা। প্রতি সপ্তাহে শনিবার বিকালে একঘণ্টা ওই সুযোগ মিলবে। এরজন্য বিশেষ একটি নম্বর দেওয়া হবে। সেই নম্বরে ফোন করে নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন যে কোনও পুরবাসী। আগামী সপ্তাহ থেকেই ওই পরিষেবা চালু হচ্ছে। শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান গৌতম দেব বুধবার একথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দাদের অনেক অভাব অভিযোগ থাকতে পারে। পুর পরিষেবা নিয়ে সমস্যায়ও পড়তে পারেন। সব সময় সবকিছু পুর প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের নজরে আসে না। তাই এবার থেকে প্রতি সপ্তাহে শনিবার টেলিফোনের সামনে বসে সরাসরি মানুষের সমস্যার কথা শুনবো। সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগের পদস্থ অফিসাররাও থাকবেন। কার কী সমস্যা, কেন তা দেরি হচ্ছে, কত দিনের মধ্যে সেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে এসবই পুরবাসীকে জানাতে সাহায্য করব। শিলিগুড়ির মত বড় এক করপোরেশনে এধরণের উদ্যোগে বহু মানুষের উপকার হবে বলে মনে করছেন বাসিন্দারাও।
পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলের মতে, সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটের চিত্রে পরিষ্কার শিলিগুড়িতে বামেদের জমানা প্রায় শেষ। তৃতীয়বারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় আসন্ন পুরভোটে শিলিগুড়িতে তৃণমূলই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে। আর গৌতম দেবকে সামনে রেখেই সেই লড়াইয়ে নামতে পারে দল। সেক্ষেত্রে ‘টক টু চেয়ারম্যান’ এর মত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান শিলিগুড়িবাসীর মনোরঞ্জনে সাহায্য করবে। গৌতমবাবু এদিন বলেন, গত ১০ বছর জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক হলেও আমি কার্যত শিলিগুড়িরও বাসিন্দা। ১৯৭৭ সালের পর থেকে বেশিরভাগ সময় মূলত বামেরাই শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের দায়িত্বে ছিল। কিন্তু পুর এলাকার উন্নয়ন সেভাবে হয়ে ওঠেনি। জঞ্জাল, রাস্তাঘাট, পানীয়জল সহ স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি করাই যে কোনও পুরসভার মূল দায়িত্ব হওয়া উচিৎ। বছরের পর বছর কলেবরে বেড়েছে শিলিগুড়ি পুর এলাকা। কিন্তু নগরোন্নয়নের কাজ সেভাবে গড়ে ওঠেনি। এবার সেই সব কাজকে অগ্রাধিকার দিতে চান গৌতমবাবুরা। এদিন তিনি বলেন, প্রথমেই শিলিগুড়ির মানুষের অভাব অভিযোগের কথা শুনতে চাই। বহু মানুষ আছেন যাঁরা পুর পরিষেবা ঠিক মত পান না, কিন্তু কাকে বলতে হবে, কোথায় বলতে হবে- সেসব বুঝতে পারেন না। আবার পুরসভার পরিষেবা পেতে অনেককে ‘ঘুষ’ দিতে হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। এমনই নানা সমস্যার কথা সরাসরি মানুষের কাছ থেকে শুনতে চাইছি। সেগুলির দ্রুত সমাধান করাই আমাদের লক্ষ্য।
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভার মেয়র পদে বসেই এধরণের উদ্যোগ প্রথম নেন ফিরহাদ হাকিম। প্রথমে প্রতি বুধবার এবং পরে প্রতি শনিবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান চালু করেন তিনি। খুব দ্রুত এই অনুষ্ঠান জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কলকাতা শহরে। এখনও চলছে। গৌতমবাবু বলেন, কলকাতার বিষয়টি জানি। ভাল উদ্যোগ বলে আমরাও তা করতে চাই।