দুই সপ্তাহ পরেও কেন্দ্রের ফ্রি রেশনের দেখা নেই, সরব ডিলাররা
কোভিড (COVID19) সংক্রমণের জেরে ধস্ত দেশের তথা রাজ্যের দরিদ্র মানুষের অর্থনীতি। অথচ তেরো দিন পরেও রাজ্যে চালু করা গেল না কেন্দ্রের বিনামূল্যের রেশন (Ration)পরিষেবা। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা প্রকল্পে মে ও জুন মাসে মাথাপিছু ৫ কেজি করে রেশন দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য রাজ্যে যা চালু হলেও, এই রাজ্যে ১৩ দিন হয়ে গেলেও তা চালু হয়নি বলে জানাচ্ছে রেশন ডিলারদের সংগঠন। তাদের অভিযোগ, এই রাজ্যের জন্যে বরাদ্দকৃত ধানই এখনও কিনে উঠতে পারেনি ফুড করপোরেশন অফ ইন্ডিয়া। ফলে কোভিডের কারণে পিছিয়ে গেল রাজ্যে কেন্দ্রের রেশন দেওয়ার পরিকল্পনা।
চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসেই কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করে কোভিডের সময়ে আরও দু’মাস বিনামূল্যে কেন্দ্রের তরফে রেশন দেওয়া হবে। সেই মোতাবেক ফুড করপোরেশন অফ ইন্ডিয়ার সমস্ত রাজ্যের ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়৷ তাদের মাধ্যমে এই প্রকল্পের কথা জানানো হয় রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনকে। তারা রেশন দোকানগুলিকেও প্রস্তুতি নিতে বলে। কিন্তু মে মাসের আট দিন পেরিয়ে গেলেও রেশন বন্টন শুরু করতে পারা যায়নি এই রাজ্যের কোনও প্রান্তে। রেশন ডিলারদের অনেকেই অবশ্য গোটা ঘটনাকে রাজ্যের প্রতি বঞ্চনা বলে অভিযোগ তুলেছেন।
ফুড করপোরেশন অফ ইন্ডিয়া সূত্রে খবর, রাজ্যে তাদের একাধিক কর্মী করোনা আক্রান্ত। একাধিক আধিকারিক আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। ফলে প্রসেসের কাজ আটকে আছে। এই আধিকারিকদের পরিবর্তে অন্য কেউ এসে কাজ করবে এমনটা ভাবার কিছু নেই। ফলে এই রাজ্যের রেশন প্রাপকদের জন্যে বরাদ্দ করা চালের কেনা ও বন্টন করার জন্যে যা দেখভাল করতে হবে এমন কেউ নেই। গোটা ঘটনা সম্পর্কে অবহিত রাজ্যের খাদ্য দফতর।
রাজ্য খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, “কেন্দ্র যা বরাদ্দ করেছে সেই অনুযায়ী বিনামূল্যে এই রাজ্যের জন্যে চাল এখনও ফুড করপোরেশন অফ ইন্ডিয়া কিনে উঠতে পারেনি। এছাড়া তাদের অনেক কর্মী এখন কোভিডে আক্রান্ত। ফলে সমস্যা শুরু হয়েছে।” কেন্দ্রের একটা অংশ অবশ্য ভেবেছিল বাইরের রাজ্য থেকে চাল কিনে এনে এখানে রেশনে দেওয়া হবে। কিন্তু রেশন ডিলারদের সংগঠন তাতে রাজি নয়৷ রেশন ডিলার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, “ফুড করপোরেশন অফ ইন্ডিয়া চাল কেনা নিয়ে আগে থেকে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। এছাড়া আমাদের রাজ্যে যে ধান থেকে চাল হয় তা উৎকৃষ্ট মানের। বাইরের রাজ্য থেকে যে চাল এনে দেওয়া হয় তা অত্যন্ত নিম্নমানের। খারাপ চাল দোকান থেকে দেওয়া হলে অশান্তি বাঁধবে। তাই আমরা রাজি নই।” কবে থেকে চালু হবে কেন্দ্রের রেশন তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন কেউই। তাই খাদ্য মন্ত্রকের দ্বারস্থ হতে চাইছে রেশন ডিলারদের সংগঠন।