করোনাকালে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য শিলিগুড়ি পুরসভাকে প্রথম ধাপে ১০ কোটি
শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখে করোনার এই সঙ্কটকালে টানা কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন গৌতম দেবকে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় গৌতমের। সেখানে শিলিগুড়ির যে কোনও সমস্যা বা যে কোনও দরকারেও তাঁকে জানানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন গৌতমকে। ভোটে তৃণমূল এ শহরে হারলেও শিলিগুড়ির প্রতি তাঁর ভালবাসা একেবারেই কমেনি, বরং যা ছিল তাই রয়েছে বলেও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
এ দিনই শিলিগুড়ি পুরসভার জন্য প্রথম ধাপে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পুর দফতর। নানা খাত মিলিয়ে সেই টাকা দেওয়া হয়েছে। গৌতম বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আশীর্বাদ করে শিলিগুড়ির জন্য যা যা করণীয় তা করতে বলেছেন। শহরের মানুষের জন্য আমরা সকলে মিলে রাস্তা নেমে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া এ দিন রাজ্যের পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে গৌতম বৈঠক করেছেন। দুই দফতরের আধিকারিকেরা সেখানে ছিলেন। শহরের পরিকাঠামোগত দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। স্থির হয়েছে, আগামী বুধবার পুরমন্ত্রী কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য, আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করবেন। শনিবার গৌতমেরও কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি ফেরার কথা।
এ বার শিলিগুড়ি শহরে ভোটে হেরেছে শাসক দল। শিলিগুড়ি এবং ডাবগ্রাম ফুলবাড়িতে দল বিজেপির কাছে হারলেও লোকসভার তুলনায় দল অনেকটাই এগিয়েছে। ভোটের ব্যবধানের পরিমাণও কমিয়েছে। গৌতমের ভোটে হারের পর থেকে তাঁকে দল বা নেত্রী কোন পদে বসাবেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। শেষে, প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী পুরভোট গৌতম দেবের নেতৃত্বেই তৃণমূল লড়তে যাচ্ছে।
আপাতত করোনা মোকাবিলার সঙ্গে পরিকাঠামোর দিকে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। নতুন শ্মশান, ডাম্পিং গ্রাউন্ড, নিকাশি বন্দোবস্ত ঠিক করার কাজ চলছে। আবার প্রশাসনিক দিক থেকে পুরসভার খোলনলচে পাল্টানোর পথেই গৌতমেরা।
শিলিগুড়িতে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূলের ওমপ্রকাশ মিশ্র। ফল বলছে, তাঁর সঙ্গেই বিজেপির লড়াই হয়েছে। সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্যেরা পিছিয়ে গিয়ে তৃতীয় হয়েছেন। কিন্তু পুর এলাকায় ৮টির বেশি ওয়ার্ডে জিততে পারেনি দল। তাই দায়িত্বে বসে বিভিন্ন ওয়ার্ডে নজরও দিচ্ছেন গৌতম। বামফ্রন্টের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো, মেয়র পরিষদ কমল আগরওয়ালকে দলে টেনে দু’টি ওয়ার্ড তো বটেই, অবাঙালি মহলে দলের নতুন নেতার সংযোজন হয়েছে। এর বাইরে সিপিএম তো বটেই, কংগ্রেসেরও কয়েকজনের সঙ্গে দলের শীর্ষ স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে খবর।
তৃণমূল সূত্রের খবর, শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সংকেত নিয়ে যে ওয়ার্ডগুলিতে দল বরাবর দুর্বল, সেখানে দলবদল করা হবে। এ বিষয়ে গৌতমকে পুরো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।