দেশ বিভাগে ফিরে যান

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল অর্থনীতি

May 17, 2021 | 2 min read

করোনা সংক্রমণে লাগাম টানতে আর লকডাউনের পথে হাঁটেনি কেন্দ্র। বরং রাজ্যগুলির ঘাড়ে সেই দায় ঠেলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু এর জন্য যে ব্যবসায়িক ক্ষতি হচ্ছে, তার দায়ও কি পুরোপুরি নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলবে কেন্দ্র? এই প্রশ্নই এখন সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সংশ্লিষ্ট মহলের হিসেব, এপ্রিলের গোড়া থেকে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত ধরলে, দেড় মাস কেটে গিয়েছে। এর মধ্যে দেশে সামগ্রিকভাবে শুধু খুচরো ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা। প্রশ্ন উঠছে, এই বিপুল লোকসানের ক্ষতে প্রলেপ দিতে মোদি সরকার কি ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে থাকবে? কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে নীরব থাকায় ক্ষোভ বাড়ছে ব্যবসায়ীদের। তাঁরা এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন।


করোনার প্রভাব কমবেশি সারা দেশেই পড়েছে। সংক্রমণে লাগাম দিতে আলাদা আলাদা পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্যগুলি। পশ্চিমবঙ্গেও চালু হয়েছে কঠোর বিধি। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের খেসারত শুধু রাজ্য প্রশাসন দেবে, তা হয় না বলেই মত ব্যবসায়ীদের। তাঁদের যুক্তি, শিল্প বা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নীতি ও নিয়মগুলির বেশিরভাগটাই কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত। আর্থিক সুরাহা দেওয়ার ক্ষমতা আছে একমাত্র কেন্দ্রের। তাই খুচরো ব্যবসার পাশে দাঁড়াতে গেলে সবার আগে তাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, কর ছাড়, কর জমার সময়সীমা বৃদ্ধি, নিয়ম শিথিল বা পুঁজি জোগাড়ে সাহায্য করার মতো কাজগুলি কেবল মোদি সরকার করতে পারে।


গত বছর লকডাউনের সময় আত্মনির্ভর ভারত গড়ার ডাক দিয়ে ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার বেশিরভাগই ছিল ঋণ নেওয়ার প্রকল্প। কিন্তু দেশের আঞ্চলিক ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির সর্বভারতীয় মঞ্চ কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের কর্তাদের কথায়, ওই প্যাকেজ খুচরো কারবারিদের কাজে আসেনি। তাই ব্যবসার উন্নতি হয়নি। কনফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেন, ‘আমরা রাজ্য ধরে ধরে সমীক্ষা করেছি। সেই সমীক্ষা বলছে, দেড় মাসে ১২ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়ীদের। তাঁদের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। এদিকে জিএসটি বা আয়কর জমা দেওয়ার সময়সীমা মেনে না চললে বড় অঙ্কের জরিমানার মুখে পড়তে হবে ব্যবসায়ীদের। তাই আমাদের আর্জি সরকার নিয়ম শিথিল করুক ও আর্থিক সুরাহা দিক।’


কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনসের সভাপতি সুশীল পোদ্দারও জানিয়েছেন, প্রাণে বাঁচলে তবে ব্যবসা। আমরা কেউই লকডাউনের বিপক্ষে নই। কিন্তু কর জমার সময়সীমা বাড়ানো বা আর্থিক সুবিধা দেওয়ার দাবি আমাদেরও রয়েছে। তার সঙ্গে আমরা চাই, আদালতে ঝুলে থাকা ‘সিভিল’ কেসগুলির শুনানি অন্তত ছ’মাস পিছিয়ে দিক সরকার। এতে কারবারে বিরাট সমস্যা হয় না। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যে আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন, তাতে কোর্টকাছারি করার মতো টাকা অনেকেরই নেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Economy, #COVID Second Wave

আরো দেখুন