বাংলায় বিধান পরিষদ গড়ার প্রস্তাব পাশ মন্ত্রিসভায়
পশ্চিমবঙ্গে বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব পাশ হল সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, এবার ক্ষমতায় এলে বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনা হবে। সেইমতো পাশ হয়ে গেল প্রস্তাব। নিজাম প্যালেস থেকে টেলিকনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের প্রস্তাব পেশ করেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রিসভার অনুমোদনেই পাশ হয় বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব। জানা গিয়েছে, বিধানসভার এক-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ সর্বাধিক ৯৮ সদস্য নিয়ে বাংলার বিধান পরিষদ গঠিত হওয়ার কথা। এরপর প্রস্তাব আকারে যা পেশ করা হবে বিধানসভায়। তা পাশ হওয়ার পর রাজ্যপালের মাধ্যমে পাঠানো হবে কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য। সংসদে এই প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরই বাংলায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিধান পরিষদের সদস্য নির্বাচনের কাজ শুরু হবে।
এছাড়াও এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে স্যাটেলাইট চিকিৎসা সেন্টার গড়ার প্রস্তাব পাশ হয়েছে। ইতিমধ্যে সল্টলেক স্টেডিয়াম, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম এবং কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামের সেফ হোম এবং অস্থায়ী হাসপাতাল গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি, এদিনের বৈঠকেই পেশ হয়েছে কর্মচারী নিয়োগ বিধি সংক্রান্ত প্রস্তাব। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পুলক রায়, বেচারাম মান্না, অরূপ রায়, সুজিত বোস প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠক হবে ২৪ মে।
বিধান পরিষদ
রাজ্য আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট বা এক কক্ষবিশিষ্ট হতে পারে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার উচ্চকক্ষের নাম বিধান পরিষদ এবং নিম্ন কক্ষ বিধানসভা।
বিধান পরিষদের গুরুত্ব
ভারতীয় সংবিধানের ১৭১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভার সদস্য সংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বেশি হবে না। আবার কোনও অবস্থাতেই তা ৪০-এর কমও হবে না। বিধান পরিষদের সদস্যদের মেয়াদ ৬ বছর। প্রতি ২ বছর অন্তর এক তৃতীয়াংশ সদস্য অবসর গ্রহণ করেন।
বিধান পরিষদের ভোট
এক তৃতীয়াংশ করে সদস্য নির্বাচিত করেন বিধায়ক ও মিউনিসিপ্যালিটি বা পঞ্চায়েত। ১২ ভাগের এক ভাগ করে সদস্য নির্বাচিত হন স্নাতক ও শিক্ষকদের ভোটে। ছ’ভাগের এক ভাগ সদস্য রাজ্যপাল মনোনীত করেন।
বিধান পরিষদের আইনি ক্ষমতা
অর্থ বিল ছাড়া যে কোনও বিল বিধান পরিষদে উত্থাপন করা যায়। বিধানসভায় পাশ হওয়া কোনও বিলকে বিধান পরিষদ সর্বাধিক ৪ মাস পর্যন্ত আটকে রাখতে পারে।