মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিই সার, করোনাকালে দেখা নেই বিজেপির
বিধানসভা ভোটের আগে মানুষের পাশে থাকার কথা বললেও কোভিড পরিস্থিতিতে ময়দান থেকে কার্যত উধাও বিজেপি। করোনা (Covid 19) সঙ্কটকালে কমিউনিটি কিচেন খোলা তো দূরের কথা, বিজেপির পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ওষুধ, অক্সিজেন প্রভৃতি বিলির মতো উদ্যোগ তেমন নজরে পড়ছে না। এনিয়ে রীতিমতো অসন্তুষ্ট সাধারণ মানুষ। তাদের অভিযোগ, ভোটের আগে ভাষণ দিলেও ভয়াবহ এই বিপর্যয়ের সময় গেরুয়া বাহিনীর দেখা নেই। বিজেপি (BJP) নেতারা অবশ্য এসব অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপির বিধায়ক ও কর্মীরা মানুষের পাশে রয়েছেন।
বিধানসভা ভোটের আগে শিলিগুড়িতে ব্যাপক সক্রিয় ছিল গেরুয়া বাহিনী। পদযাত্রা, পাড়া বৈঠক, মিছিল, বাড়ি বাড়ি যাওয়ায় তারা মেতে ছিল। স্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি ভিন রাজ্যের নেতারাও সেইসব কর্মসূচিতে শামিল হতেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাদের সক্রিয়তা ছিল নজরকাড়া। যার জেরে এবার বিধানসভা ভোটে এখানে ব্যাপক সাফাল্য পেয়েছে বিজেপি। তারা মহকুমার শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়া, তিনটি বিধানসভাই দখল করেছে। কিন্তু, ভোট মিটতেই গেরুয়া বাহিনীর সেই সক্রিয়তা নজরে পড়ছে না। তাই বিজেপির ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষ বিস্তর প্রশ্ন তুলেছে। শিলিগুড়িবাসীর একাংশের বক্তব্য, কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আমআদমির সহযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ওষুধ ও অক্সিজেন দিয়ে নাগরিকদের সহযোগিতা করার পাশাপাশি তাঁরা কিছু জায়গায় কমিউনিটি কিচেন চালু করেছে। এখানেও তৃণমূল নেতা-কর্মীরা যথেষ্ট সক্রিয়। সিপিএমের রেড ভলান্টিয়াররাও ময়দানে রয়েছে। কিন্তু, বিজেপি কর্মীদের সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। নাগরিকদের অভিযোগ, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের গ্রাফ ও মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও বিজেপির কর্মীরা কার্যত বেপাত্তা।
শুধু সাধারণ মানুষ নন, বিজেপির অন্দরেও এনিয়ে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। তাঁদের একাংশ তিন বিধায়কের অবস্থানে বসার ঘটনা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন। বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা বিক্ষুব্ধ নেতা নৃপেন দাস বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে পরিকল্পিতভাবে শিলিগুড়িবাসীর পাশে দাঁড়াতে পারত দল। খাবার, ওষুধ, অক্সিজেন, অক্সিমিটার নিয়ে দলীয়ভাবে মানুষের কাছে যাওয়া যেত। কিন্তু দলের বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর নেতারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ, তাঁরা দলের নেতা-কর্মীদেরই খোঁজখবর রাখেন না। তাই এই বিপর্যয়ের সময় সামাজিক কাজে দলকে লাগানো সম্ভব হল না।
যদিও এসব বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপির বর্তমান শাসক গোষ্ঠী। বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, মাস্ক, পিপিই কিট, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর প্রভৃতি বিভিন্ন হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে। দলীয় কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকা স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। কোভিড আক্রান্তদের বাড়িতে খাবার, ওষুধ, অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং অভিযোগ ভিত্তিহীন।