প্রিপেইড রিচার্জ বছরে ১৩ বার কেন? গ্রাহকদের প্রশ্নে বিব্রত ট্রাই
যাঁরা পোস্ট পেইড মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, তাঁরা মাসে মাসে বিল জমা করেন। কিন্তু যাঁরা প্রিপেইড বিলে মেটান, তাঁদের মাসিক বিল বলে কিছু নেই। কারণ বেশিরভাগ মোবাইল পরিষেবা সংস্থাই ‘মান্থলি’রিচার্জ বলতে ২৮ দিনের ট্যারিফ প্ল্যানকে সামনে আনে। মোবাইল সংস্থাগুলির এই সংস্কৃতিতে ক্ষোভ বাড়ছে গ্রাহকের মধ্যে। তা নিয়ে অভিযোগও জমা পড়ছে বিস্তর। কেন মোবাইলের প্রিপেইড প্ল্যান বলতে একমাসের কোনও প্ল্যান থাকবে না, তা নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ছে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা ট্রাইয়ের দপ্তরে। বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে তারা। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে উদ্যোগী হয়েছে ট্রাই (TRAI)। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের থেকে যুক্তি ও পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।
সাধারণত প্রিপেইড মোবাইল প্ল্যানগুলি ২৮ দিন বা তার গুণিতকে হয়। এর ফলে কোনও গ্রাহক যদি ২৮ দিন অন্তর রিচার্জ করেন, তাহলে তাঁকে এক বছরে ১২ বারের বদলে ১৩ বার রিচার্জ করতে হয়। এতেই আপত্তি গ্রাহকদের। তাঁদের যুক্তি, পোস্ট পেইড গ্রাহক যদি ১২ মাসে ১২ বার বিল জমা করেন, তাহলে প্রিপেইড গ্রাহক ১৩ বার দাম মেটাবেন কেন? গ্রাহকদের বক্তব্য, কোনও মাসে দিন সংখ্যা ২৮ থেকে ৩১, যাই হোক, একমাসের প্রিপেইড প্ল্যানের ক্ষেত্রে যে তারিখে রিচার্জ করানো হচ্ছে, পরের মাসের সেই তারিখেই রিচার্জ করার সুযোগ দেওয়া উচিত গ্রাহককে। একইভাবে ত্রৈমাসিক, ষান্মাষিক বা বার্ষিক প্ল্যান থাকা দরকার।
ট্রাই গ্রাহকদের এই দাবিদাওয়াগুলিকেই সামনে এনেছে। পাপাপাশি তারা উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছে, উন্নত দেশে একমাসের প্রিপেইড প্ল্যান মানে একমাসই বোঝানো হয়, সেই মাসে দিনের সংখ্যা যাই-ই হোক না কেন। তারা টেলিকম মহলের থেকে জানতে চেয়েছে, ২৮ দিনের বদলে সেই নিয়ম চালু করা যাবে না কেন। যদি গ্রাহক ২৮ দিনের বদলে ২৯, ৩০ বা ৩১ দিনের জন্য মোবাইল রিচার্জ করতে চান, তাহলে তার সুযোগ দেওয়া যাবে কি, সেই প্রশ্নও তুলেছে ট্রাই। পাশাপাশি তারা এটাও জানতে চেয়েছে, প্রিপেড মোবাইল সংযোগে রিচার্জ সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম বেঁধে দিয়ে তা মোবাইল সংস্থাগুলিকে মেনে চলতে বাধ্য করা হবে কি না। আবার নিয়মে বাধ্য না করে শুধুমাত্র পরামর্শদাতা হিসেবে এক্ষেত্রে ট্রাই কাজ করতে পারে কি না, সেই বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে ট্যারিফ প্ল্যানগুলির বিষয়ে স্বাধীনতা থাকবে মোবাইল সংস্থাগুলির উপর। এই প্রশ্নগুলি সামনে রেখে টেলিকম সংস্থাগুলির থেকে যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি শুনতে চেয়েছে ট্রাই। তার উপর ভিত্তি করেই নতুন নিয়ম আনবে তারা, এমনটাই জানা গিয়েছে। সেই নিয়মে গ্রাহকের কোনও সুরাহা হয় কি না, এখন সেটাই দেখার।