সরকারি কর্মীদের ভ্যাকসিন – তথ্যভাণ্ডার তৈরি করছে রাজ্য
রাজ্য সরকারি কর্মীদের করোনার ভ্যাকসিন (Covid Vaccine) দেওয়ার জন্য সব দপ্তরকে দ্রুত নির্দিষ্ট প্রোফর্মায় কর্মীদের তথ্যভাণ্ডার তৈরি করতে বলা হল। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে এব্যাপারে সব দপ্তরের সচিব/প্রধান সচিবদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই কাজের জন্য প্রতি দপ্তরকে একজন নোডাল অফিসার পর্যন্ত নিযুক্ত করতে বলেছে স্বাস্থ্যদপ্তর।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার কয়েকদিন আগে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাপারে নতুন নীতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, একদিকে যেমন সাধারণ মানুষকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে, তেমনি কয়েকটি নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষকে চিহ্নিত করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। করোনায় আক্রান্ত হওয়া ও ছড়ানোর আশঙ্কার বিষয় পর্যালোচনা করে কয়েকটি শ্রেণিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই বিশেষ শ্রেণিগুলির মধ্যে স্থায়ী ও অস্থায়ী সরকারি কর্মীদের পাশাপাশি পরিবহণ কর্মী, হকার, বিভিন্ন বাজারের খুচরো বিক্রেতা, রেশন-কেরোসিন-গ্যাস ডিলার ও তাদের কর্মী, আইনজীবী-মুহুরি-ল ক্লার্ক, সাংবাদিক, যৌনকর্মী, করোনা সংক্রান্ত কাজের স্বেচ্ছাসেবী, সংশোধনাগারের বন্দি ও হোমের আবাসিকরা প্রভৃতি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলিকে বিশেষ শ্রেণির দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে।
ভ্যাকসিন প্রাপকদের দু’টি শ্রেণিতে ভাগ করে তালিকা করতে বলা হয়েছে। একটি শ্রেণিতে ৪৫ থেকে বেশি বয়স্করা থাকবেন। অন্য তালিকাটিতে থাকবেন ১৮-৪৪ বছর বয়সিরা। ভ্যাকসিনের আলাদা মজুত ভাণ্ডার থেকে দু’টি শ্রেণিকে দেওয়া হবে। কারণ ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের জন্য যে ভ্যাকসিন লাগবে তা কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য সরকারকে কিনতে হবে। বিশেষ কেন্দ্র খুলে বা সাধারণ ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্র যেগুলি সরকারি হাসপাতাল-স্বাস্থ্যে কেন্দ্রে চলছে সেখানে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বিশেষ শ্রেণির লোকেদের।
সরকারি দপ্তরগুলির কাছে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাতে দপ্তর নিযুক্ত নোডাল অফিসারকে খুব দ্রুত কর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে। লকডাউন পরিস্থিতির জন্য এখন অধিকাংশ সরকারি অফিসে কর্মীরা আসছেন না। ফলে তালিকা তৈরি করতে একটা সমস্যা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা পার্থ চট্টেপাধ্যায় জানিয়েছেন, অফিসের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিভিন্ন দপ্তর তালিকা তৈরির কাজ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে করতে চাইছে। কিন্তু এখন যা অবস্থা তাতে কিছুটা বেশি সময় লাগতে পারে।
নির্দিষ্ট প্রোফর্মায় যে তালিকা তৈরি করে রাখতে বলা হয়েছে, তাতে কর্মীদের বিস্তারিত তথ্য থাকবে। বয়সের ভিত্তিতে দু’টি শ্রেণি তো করতেই হবে। তাছাড়া কোনও কর্মী আগে প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন নিয়েছেন কি না, কবে নিয়েছেন এবং সেটি কোন ভ্যাকসিন তা জানাতে হবে। তাছাড়া আধার নম্বর, কর্মীর আইডি নম্বর, অফিসের নাম প্রভৃতিও দিতে হবে। ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেলের মাধ্যমে কর্মীদের তথ্য জোগাড় করা কাজ চলছে। স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে বিভিন্ন দপ্তরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, তাদের অফিসগুলিতে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা যাবে কি না। কলকাতা পুর এলাকায় অবস্থিত অফিসের ক্ষেত্রে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের মোবাইল নম্বর দিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।