আসানসোলে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে গুন্ডামির অভিযোগ রেড ভলান্টিয়ার্সদের বিরুদ্ধে?
অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে হুলস্থুল কাণ্ড আসানসোলে (Asansol)৷ রোগীর পরিবারের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ল রেড ভলান্টিয়ার্সরা। দু’পক্ষের ঝগড়া-বিবাদ অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দেখা গেল ফেসবুক লাইভে৷ মামলা গড়াল থানা পুলিশ পর্যন্ত। রেড ভলেন্টিয়ার্সদের (Red Volunteers) অভিযোগ, রোগী পরিবারকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েও তাঁরা হেনস্থার শিকার হয়েছেন৷ রোগী পরিবারের পালটা অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময়ের আগে মুমূর্ষু রোগীর বেড থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার বলপূর্বক খুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে রেড ভলান্টিয়ার্স৷
করোনা সংক্রমিত মুমূর্ষু রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করে চারদিন পর ফেরত চাইতে গিয়ে হেনস্তা হতে হল আসানসোলের রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যদের৷ ওই অঞ্চলের বাসিন্দা সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় (৭৬) করোনা সংক্রামিত হওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে প্যানক্রিয়াসের সংক্রমণে ভুগছেন৷ বাড়িতেই চিকিৎসারত অবস্থায় তার অক্সিজেন সার্পোটের প্রয়োজন হয়ে পড়ে৷ সুকান্তবাবুর মেয়ে সৌমিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাবার শারিরীক পরিস্থিতি অনুসারে অক্সিজেন সরবরাহের সহযোগিতা চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করেছিলাম৷ জানতে পেরে রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। চাহিদা অনুসারে ও রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি বিচার করে গত ১৬ মে ফেরত যোগ্য ৫০০০ টাকা ও প্রতিদিন ৫০ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে চারদিনের জন্যে মৌখিক চুক্তিতে অক্সিজেন সিলিন্ডার আমাদের দেয় ওই বাম স্বেচ্ছাসেবকরা৷” সুকান্ত বাবুর দাদা সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ পাঁচদিনের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে চারদিনের মাথায় বৃহস্পতিবার রাতে রেড ভলান্টিয়ার্স তাঁদের দেওয়া অক্সিজেন সিলিন্ডার ফেরত নিতে আসে। আমরা রোগীর অবস্থা দেখে অক্সিজেন সিলিন্ডার ততক্ষণাৎ দিতে আপত্তি জানাই।
রেড ভলান্টিয়ার্সের পক্ষে এসএফআই নেতা মিহির চক্রবর্তী বলেন, “উইন্ডো পিরিয়ডের জন্য আমরা সিলিন্ডার দিয়ে থাকি৷ কিন্তু ওনারা চারদিন ধরে সিলিন্ডার আটকে রেখেছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে ওনারাই দুর্ব্যবহার করেন।” তিনি বলেন, ওনাদের কাছে পুরনিগমের বাড়তি দুটি সিলিন্ডার রয়েছে। তবু আমাদের সিলিন্ডারটি আটকে রেখেছে। ডাক্তার কুলস্থ আচার্য্য বলেন, “আমি রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্য ও বর্তমানে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত৷ রোগীর কাগজপত্র খতিয়ে দেখে প্রস্তাব দিই এই রোগীকে বাড়িতে না রেখে হাসপাতালে ভরতি করা উচিত। তবে অক্সিজেন খোলার পর পরীক্ষা করে দেখি অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ এর নিচে নামছে না। কিন্তু আমাদের পরামর্শ মানতে রাজি হয়নি৷”
রোগী পরিবারের অভিযোগ, অক্সিজেন নিয়ে টানাপোড়েনের সময় রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অশ্রাব্য গালিগালাজ ও দুর্ব্যবহার করছে। পালটা রেড ভলান্টিয়ার্সদের পক্ষ থেকে আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়৷ গোটা ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়৷ শেষ পর্যন্ত আসানসোল পুরনিগম থেকে ওই রোগী পরিবারকে অন্য একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়৷