করোনার বছরেও রাজ্যে প্রায় তিন লক্ষ নতুন চাকরি, বলছে কেন্দ্রের তথ্য

করোনা পর্বে যেখানে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন ও হারাচ্ছেন, বেতন ছাঁটাইয়ের কোপে পড়ছেন, সেখানে কর্মসংস্থানের এই সাফল্য আশার আলো দেখাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাকে।

May 24, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

করোনা সংক্রমণ সামলেও চাকরির বাজারে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেল বাংলা। গত আর্থিক বছরে রাজ্যে প্রায় ২ লক্ষ ৮২ হাজার জনের চাকরি হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে কাজ (jobs) পেয়েছেন প্রায় ২৩ হাজাত ৫০০ জন। এমনই তথ্য সামনে এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শ্রমমন্ত্রকের অধীন এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশনের খবর, যাঁরা এই চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা প্রতিষ্ঠিত ও অপেক্ষাকৃত বড় সংস্থাতেই কাজ পেয়েছেন। করোনা পর্বে যেখানে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন ও হারাচ্ছেন, বেতন ছাঁটাইয়ের কোপে পড়ছেন, সেখানে কর্মসংস্থানের এই সাফল্য আশার আলো দেখাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাকে।

গত অর্থবর্ষের এপ্রিল ও মে মাস কেটেছে লকডাউনের মধ্যে। তখন নতুন চাকরির দরজা বন্ধ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সেই পরিস্থিতিতেও রাজ্যের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছেন অনেকেই। সংখ্যাটা প্রায় এক হাজার। জুন থেকে শুরু হয়েছিল আনলক পর্ব। তখন থেকেই খুলে যায় চাকরির বাজার। তারপর থেকে গোটা বছরটাই কর্মসংস্থানে আর বিমুখ করেনি বাংলাকে। গত মার্চ পর্যন্ত চাঙ্গা ছিল চাকরির বাজার। তথ্য বলছে, রাজ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ পেয়েছেন ২২ থেকে ২৫ বছর বয়সিরা।

করোনার (Covid19) ফলে নড়বড়ে হয়ে পড়ে দেশের অর্থনীতি। তার খেসারত এখনও দিয়ে চলেছে শিল্প সংস্থাগুলি। তাদের অনেকেরই আর্থিক হাল যথেষ্ট খারাপ। এরই মধ্যে এত চাকরি সম্ভব কীভাবে? শিল্পকর্তারা বলছেন, আনলক চালু হওয়ার পর থেকে কয়েকটি শিল্পক্ষেত্র যথেষ্ট ভালো ব্যবসা করে। ভোগ্যপণ্য, ফার্মা বা স্বাস্থ্যক্ষেত্রে চাকরির দরজা অনেকটা খুলে যায়। ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ সংস্কৃতি বেড়ে যাওয়ায় ই-কমার্স ব্যবসা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ভোগ্যপণ্য, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বা খাবারদাবারের হোম ডেলিভারির রেওয়াজ বেড়ে যায়। অন্যদিকে, উৎসবের মরশুমে সাধারণ মানুষ খরচের পরিমাণ বাড়ায়। শিল্পমহলকে তা বাড়তি অক্সিজেন জোগাতে শুরু করে। এসবই কাজের বাজার বাড়াতে সাহায্য করে। বলছেন শিল্পকর্তারা। তাঁদের কথায়, গত বছর করোনা সংক্রমণ যত কমেছিল, ততটাই বেড়েছে চাকরির বাজার। মার্চ পর্যন্ত সেই পরিস্থিতি জিইয়ে ছিল। বলছে কেন্দ্রীয় তথ্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন্দ্র চাকরির বাজারের যে তথ্য সামনে এনেছে, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা বাস্তবে তার চেয়ে অনেকটাই ভালো। তাঁদের যুক্তি, যেসব প্রতিষ্ঠানে অন্তত ২০ জন কর্মী কাজ করেন, সেখানে প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ ধরে নেওয়া যেতে পারে, যাঁরা গত একবছরে নতুন করে পিএফের সুবিধা পেয়েছেন, তাঁরা তুলনামূলক বড় সংস্থায় কাজ পেয়েছেন। কিন্তু এমন বহু প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে একযোগে ২০ জনের কম কর্মী কাজ করেন। সেখানে যাঁরা নতুন চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের তথ্য এই হিসেবের মধ্যে নেই। অর্থাৎ রাজ্যের চাকরি পরিস্থিতি যথেষ্ট উজ্জ্বল, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen