উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

কোভিড টিকাকরণে রাজ্যে তৃতীয় জলপাইগুড়ি

May 27, 2021 | 2 min read

বাড়তে থাকা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতা ঠেকানোর প্রধান অস্ত্র এখন ভ্যাকসিন। আর এই ভ্যাকসিন দান প্রক্রিয়াই ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। তারজন্য রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় ভ্যাকসিন দানে জলপাইগুড়ি তৃতীয় স্থান উঠে এসেছে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, এখানে এখনও পর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছেন ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৩১ জন। ৬৩ হাজার ৪৭৮ জন পেয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের দাবি, জেলায় এখনও পর্যন্ত ১৫৭ শতাংশ ভ্যাকসিনেশন হয়েছে। এদিকে ভ্যাকসিন দানে প্রথম স্থানে আছে কালিম্পং জেলা, আলিপুরদুয়ার রয়েছে দ্বিতীয়তে।

জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার ভ্যাকসিনের দায়িত্বে থাকা সিএমওএইচ-৩ ডাঃ শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা রাজ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলাম। ক্রমাগত ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলতে থাকায় রাজ্যের মধ্যে তিন নম্বরে উঠে এসেছে আমাদের জেলা। আমরা প্রথম স্থানে পৌঁছনোর চেষ্টা করছি।

জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের এক কর্তা বলেন, ঘূর্ণিঝড় যশের কারণে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভ্যাকসিন দান (covid vaccination) পর্ব কার্যত ব্যাহত হয়েছে। তাই গত কয়েকদিন আগে পর্যন্ত রাজ্যের মধ্যে জলপাইগুড়ি ভ্যাকসিন দানে পঞ্চম স্থানে ছিল। গত দু’দিনের মধ্যে ভ্যাকসিন দানে কোনও বিঘ্ন না ঘটায় জলপাইগুড়ি তৃতীয় স্থানে পৌঁছে গিয়েছে। ওই স্বাস্থ্যকর্তা আরও বলেন, জেলায় এখনও পর্যন্ত যে পরিমাণ ভ্যাকসিন আছে তাতে চারদিন ভ্যাকসিন দান প্রক্রিয়া অনায়াসে চলবে।

স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, ভ্যাকসিন না আসায় কয়েকদিন ভ্যাকসিন দেওয়ার পর্ব ব্যাহত হয়। ধাপে ধাপে ভ্যাকসিন আসতেই সরকারি বিভিন্ন ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ চালানো হয়। তাতে যেমন ৪৫ ঊর্ধ্বদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তেমনই ভ্যাকসিন পেয়েছেন ৬০ ঊর্ধ্বরাও। এছাড়াও করোনা যোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নানা ভাবে যুক্ত কর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। পুলিস, হকার, পরিবহণ কর্মী, সংবাদমাধ্যমের কর্মীর মতো সামনের সারিতে থাকা কোভিড যোদ্ধারা ভ্যাকসিন পেয়েছেন। জেলার বাজার সমিতিগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে বাজার বসান এবং যাঁরা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মাংস, মাছ, সব্জি বিক্রি করেন তাঁদেরও ভ্যাকসিন দেওয়ার তালিকায় আনা হয়েছে। আইনজীবী, ব্যাঙ্ককর্মীদেরও ভ্যাকসিন দেওয়ার তালিকায় যুক্ত করা হচ্ছে।

এছাড়াও সুষ্ঠুভাবে ভ্যাকসিন দান করতে প্রথম থেকে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে জোর দেওয়া হয়েছে। যাঁরা ভ্যাকসিন দিতে আগে লাইনে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। যার ফলে ভ্যাকসিন দানে বড় কোনও গোলযোগ তৈরি হয়নি। যে কয়েকটি অবাঞ্চিত ঘটনা ঘটেছিল সেগুলিও প্রশাসনের তৎপরতায় মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।

অন্যদিকে, জেলায় গত সাতদিন ৩৮৫৪ জন করোনা সংক্রামিত হয়েছেন। মঙ্গলবারই দৈনিক সংক্রমণ ৭০০’র গণ্ডি পেরিয়েছে। সংখ্যার হিসেবে তা ছিল ৭২৫। তারআগের ছ’দিন যথাক্রমে ২৪ মে জেলায় সংক্রমিত হন ৫৯২ জন। ২৩ মে ৬৬২ জন। ৫০৬ জন আক্রান্ত হন ২২ মে। ২১ মে ৫১৮ জন। ২০ মে ৪১১ জন এবং ১৯ মে ৪৪০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৫৮৫। মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৩২ জনের। এরমধ্যে মঙ্গলবার একদিনেই জেলায় মারা যান ১৪ জন। যা সাম্প্রতিককালে জেলায় দৈনিক মৃত্যুর হারে রেকর্ড করেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Covid Vaccination, #jalpaiguri

আরো দেখুন