দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ছন্দে ফেরার যুদ্ধ শুরু প্রশাসনের হাত ধরে
মেঘ কেটে উঁকি দিয়েছে রোদ। সেই উষ্ণতায় কেউ সেঁকছে ভিজে যাওয়া বইপত্র, কেউ আবার শুকোতে দিয়েছে চাল। সাগরদ্বীপ (Sagar Dweep) জুড়ে এমনই খণ্ডচিত্র ধরা পড়ল শুক্রবার। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনেকটাই কেটেছে। তাই এবার ছন্দে ফেরার লড়াই। তবে এই দ্বীপাঞ্চলের বেশ কিছু জায়গা এখনও জলমগ্ন। কোথাও আবার নতুন করে জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম।
গত কয়েকদিনের জলছবি অবশ্য বদলাতে শুরু করেছে। বুধবার সাগরে কপিলমুনির আশ্রমের চারদিকে থই থই জল ছিল। সেটা অনেকটাই নেমে গিয়েছে। তবে খাল-বিল কানায় কানায় পূর্ণ। নিচু এলাকাগুলিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে জল। বহু বাড়িতেও জল ঢুকেছে। তাই রাস্তার জল নামায় রোদ মুখ দেখে অনেকেই চাদর বিছিয়ে শুকোতে দিয়েছেন ভিজে চাল। দুর্যোগের কারণে এই ক’দিন বইখাতার ধারে কাছে যেতে পারেনি পড়ুয়ারা। পড়বেই বা কী করে! সব বই-ই তো জলে ভিজে একাকার। রোদ ওঠায় কচিকাঁচার দল সেই বই মেলে দিয়েছে রাস্তায়।
এদিকে, নামখানা ব্লকের মৌসুনি দ্বীপও ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। অনেক জায়গাতেই জল নেমে গিয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ ধীরে ধীরে ফিরে এসেছে অনেক জায়গায়। পানীয় জলের অভাব মেটাতে ব্লক থেকে জলের পাউচ বোঝাই গাড়ি পাঠানো হয়েছে সেখানে। ক’দিন ধরেই সেখানে শুকনো খাবার পাঠানো হচ্ছিল। এদিন রান্না করা খাবার পেয়েছেন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার মানুষ।
পাথরপ্রতিমা, ডায়মন্ডহারবার, কাকদ্বীপ, ক্যানিংয়ের একাংশেও জল নেমে গিয়েছে বলে খবর। ডায়মন্ডহারবার ১ নং ব্লকে প্রায় সব জায়গাই শুকনো হয়ে গিয়েছে। ত্রাণ শিবিরে ওঠা সিংহভাগ লোকই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে ঘোড়ামারা দ্বীপে। জল আগের থেকে নামলেও বেশ কিছু জায়গা এখনও জলমগ্ন। পাথরপ্রতিমা ব্লকে কিছু এলাকায় নতুন করে আবার জল ঢুকেছে। ত্রাণ শিবিরে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। সুন্দরবন (Sundarbans) অঞ্চলে এই কোটালে নদীবাঁধের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। সব থেকে বিপর্যস্ত অবস্থা গোসাবার। অন্য জায়গাগুলি ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরলেও এই ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলের তলায়। বিভিন্ন স্কুল ও ফ্লাড শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষ। তবে অন্যান্য জায়গায় যেখানে জল নেমে গিয়েছে, সেখানে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হচ্ছে। ছড়ানো হচ্ছে জীবাণুনাশক।