আলাপন বদলি: বাংলার উপর বিজেপির প্রতিশোধ? তৃণমূলের পাশে বিরোধীরা
রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Alapan Bandyopadhyay) অবিলম্বে ‘ছেড়ে দেওয়ার’ জন্য আবেদন জানিয়ে রাজ্য সরকারকে গতকাল চিঠি দেয় কেন্দ্র। শুক্রবার সন্ধেয় দিল্লিতে ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের আন্ডার সেক্রেটারি অংশুমান মিশ্রের (Angshuman Mishra) লেখা এই চিঠি নবান্নে পৌঁছতেই তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রাজ্য প্রশাসনে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৯৮৭ ব্যাচের আইএএস অফিসার আলাপনের জন্য ক্যাবিনেটের অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিটি প্লেসমেন্ট অনুমোদন করেছে। তাই অবিলম্বে ওই অফিসারকে রাজ্য থেকে ‘ছেড়ে দেওয়া’র আবেদন করা হয়েছে। আগামী সোমবার, তাঁকে নয়াদিল্লির নর্থব্লকে ডিওপিটি বিভাগে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। চিঠিতে এ-ও উল্লেখ করা হয়েছে, ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (ক্যাডার) রুলস, ১৯৫৪ অনুযায়ী এই নির্দেশিকা জারি করা হলো।
কেন্দ্রের এমন ‘একতরফা’ নির্দেশে ক্ষুব্ধ নবান্নের আমলারা। রাজ্যের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি এবং যশের দুর্যোগ সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যসচিব হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালন করছেন আলাপন। এই অবস্থায় হঠাৎ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে পাঠানোর চিঠিতে ‘রাজনীতি’ দেখছেন রাজ্য প্রশাসনের অনেক শীর্ষকর্তাই।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন। কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস সাংসদ, বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি টুইটারে লিখেছেন, স্বাধীনতার ৭৪ বছরের ইতিহাসে কোনও মুখ্য সচিবকে বাধ্যতামূলক ভাবে বা সম্মতি ছাড়াই কেন্দ্রীয় সার্ভিসে যোগ দেওয়ার নজির রয়েছে? তাঁর অবসরের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা করতে বলা হয়েছে। এবং রাজ্য সরকারের কোন সম্মতি ছাড়াই। কেন্দ্র আমাকে এ ব্যাপারে একটু শিক্ষিত করে তুলুক।
সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ফেসবুকে লিখেছেন, মোদি সরকার ঔপনিবেশিক শাসকের মতো ব্যবহার করছে। এক রাজ্যের মুখ্যসচিব দিল্লিতে ডেকে নিচ্ছে। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এক নজির তৈরি করছে। মো-শা জুটিকে হারানোর জন্য বাংলার মানুষকে এই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে অধীর চৌধুরি বলেছেন, কোভিড পরিস্থিতি এই সময়টা খুব এমারজেন্সি পিরিয়ড। এমন সময় মুখ্যসচিব তাঁর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন। সেই সময় এইভাবে উঠিয়ে নেওয়াটা একটু অবাক লাগল। এটার কি সত্যি দরকার ছিল বলে প্রশ্ন তুলেছেন অধীর। প্রতিহিংসা মানসিকতা সব মিলে এটা হচ্ছে। এটা কিন্তু আমাদের কারও জন্যই ভাল হচ্ছে না।
স্বাধীনতার পর এরকম পাহাড়প্রমান ইগো সর্বস্ব ক্ষুদ্রমনস্ক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেখেনি ভারতবর্ষ, কটাক্ষ করেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ।