দেউচা পাচামি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে কোনও জমি অধিগ্রহণ নয়: মমতা
জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে লড়াই করেই বাংলার রাজনীতিতে তাঁর উত্থান। মুখ্যমন্ত্রী পদে হ্যাটট্রিকের পরেও সেই দৃষ্টিভঙ্গি অটুট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই সোমবার জেলাশাসকদের সঙ্গে রিভিউ বৈঠক শেষে নবান্নে সদর্পে ঘোষণা করলেন, ‘বীরভূমের দেউচা পাচামি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে কোনও জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। সরকারের কাছে যে জমি আছে, তা থেকেই কাজ হবে।’ বিশেষজ্ঞদের দাবি, দেউচা পাচামি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে রাজ্যে কখনও লোডশেডিং হবে না। কর্মসংস্থান হবে বহু মানুষের। আর রাজ্যের স্বার্থে এত বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ভবিষ্যতে যে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন পড়বেই, তাও বিলক্ষণ জানেন মমতা। তাই তাঁর আশ্বাস, ‘দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজের জন্য যদি জমি নেওয়া হয়, তাহলে প্রত্যেকটি পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এমনকী, তাদের বাড়ির লোকদের চাকরি, জমি-বাড়ি—সব কিছুরই ব্যবস্থা করবে সরকার। জানবেন, এই দিদি যতদিন আছে, কারও চিন্তা নেই। আমি আপনাদের পাহারাদার। সব ভাইবোনকে আশ্বস্ত করছি, কোনও অনৈতিক কাজ হতে দেব না। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় আমি ২৬ দিন অনশনে বসেছিলাম। কারও জমি কেড়ে নিতে দিইনি। এই প্রকল্পের ক্ষেত্রেও কারও জমি কেড়ে নেওয়া হবে না।’
এদিন ডুমুরজলায় ‘খেল সিটি’ তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার জন্য সবরকম উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন। তবে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে ঢিলেমি নিয়ে তিনি যে যারপরনাই বিরক্ত, তা এদিন নরমেগরমে বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘কাজ হচ্ছে, কাজ হচ্ছে বলে বহুদিন ধরে শুনছি। কিন্তু কাজ এখনও এগয়নি। দীঘায় যে ব্রিজ হওয়ার কথা, প্রতি ছ’মাস পরপর তার কাজের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুমতি চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই কাজ শেষ হয়নি। এদিকে নজর দিতে হবে।’ তিনি স্পষ্ট করে দেন, কোনও কাজ ফেলে রাখা যাবে না।
শুধু ঢিলেমি নয়, একাধিক প্রকল্পের কাজও যে ঠিকভাবে করা হচ্ছে না, সেকথা এদিন প্রকাশ্যে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘দীঘায় দেখলাম যশের দাপটে বাঁধানো মার্বেল উঠে গিয়েছে। তখনই চোখে পড়ল, ওগুলো পাথরের উপর বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কেন হবে এরকম! আগে তো খুঁড়ে নিতে হবে একটু। আবার দেখুন, রাস্তা মেরামতির সময় পিচের উপর পিচ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এটা সঠিক পদ্ধতি নয়। নতুন পিচ করার আগে পুরনো পিচ তো একটু তুলে নিতে হবে নাকি!’ আর এপ্রসঙ্গেই তিনি টেনে আনেন মাঝেরহাট ব্রিজ বিপর্যয়ের কথা।