বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে বসানো হচ্ছে অক্সিজেন প্লান্ট
করোনার (COVID 19) বিরুদ্ধে লড়াই করতে দক্ষিণ দিনাজপুর (South Dinajpur) জেলায় ঢেলে সাজানো হচ্ছে চিকিৎসা পরিকাঠামো। ইতিমধ্যেই জেলায় দু’টি অক্সিজেন প্লান্ট (Oxygen Plant) বসানোর অনুমোদন মিলেছে। সেগুলি তৈরির প্রক্রিয়াও চলছে। এবার বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হবে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, জেলা হাসপাতালেও প্লান্ট বসানোর অনুমোদন মিলেছে। খুব শীঘ্রই কাজ চালু হবে।
বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতাল ভবনের দ্বিতীয় তলায় কোভিড ওয়ার্ড চালু হচ্ছে। সেখানেই এই অক্সিজেন প্লান্টের মাধ্যমে রোগীদের পরিষেবা দেওয়া হবে। এনিয়ে জেলায় তিনটি অক্সিজেন প্লান্ট বসতে চলেছে। এগুলি হয়ে গেলে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সুবিধা হবে। জেলায় বাইরে থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করার ক্ষেত্রে চাপ কমবে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, বালুরঘাট সদর হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড খোলা হচ্ছে। সেখানে ১৩০টি বেড থাকবে এবং ২০টি বেড নিয়ে হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট চালু করা হবে। সদর হাসপাতালেই আরও একটি অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর অনুমোদন মিলেছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। পাশাপাশি বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর কাজের টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেও কাজ শুরু হয়ে যাবে।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাজ্য জুড়েই অক্সিজেনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলাতেও অক্সিজেনের সঙ্কট ছিল। এই করোনা ও আত্মশাসনের সময়কালে মালদহ থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার জেলায় নিয়ে আসতে হয়। যার ফলে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে রাজ্য স্বাস্থ্যভবনে অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেইমতো স্বাস্থ্যভবন থেকে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। যার টেন্ডার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যেই কাজ চালু হবে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর অনুমোদন মিলেছে। সেই কাজও দ্রুত চালু হয়ে যাবে। এই তিনটি প্লান্ট চালু হয়ে গেলে মালদহ থেকে সিলিন্ডার ভর্তি অক্সিজেন অনেক কম নিয়ে আসতে হবে।
এদিকে বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালে ১৩০টি সাধারণ করোনা বেড এবং ২০টি বেডের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট খোলা হচ্ছে। সেখানে অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর দায়িত্ব নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল সার্ভিস কো-অপারেশন। সেই কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে। এছাড়াও হাসপাতালের ওই করোনা ওয়ার্ড চলতি সপ্তাহেই চালু হতে পারে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরে তৃতীয় ঢেউ আসতে চলছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বর্তমানে জেলায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। তবে আত্মশাসনের কারণে সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। জেলায় এই মুহূর্তে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা হাজারের মতো। তবে সংক্রমণ কমলেও মৃত্যুতে কোনওভাবেই লাগাম দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
২৫ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই আগামী দিনের কথা মাথায় রেখে হাসপাতালে নতুন ওয়ার্ড ও অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হচ্ছে। এছাড়াও জেলা সদর হাসপাতালে শিশুদের জন্য পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট চালু করা হবে।