মালদহে নদী ভাঙনে ৫০ কোটি বরাদ্দ সেচ দপ্তরের
মালদহের গঙ্গা, মহানন্দা, ফুলহারের মতো প্রধান নদীগুলিতে ভাঙন রোধে ৫০ কোটি টাকার প্রস্তাব রাজ্যে পাঠাল জেলা সেচদপ্তর। নদীগুলিতে ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য উদ্যোগী হয়েছে দপ্তর। ইতিমধ্যে জেলার ভাঙন কবলিত নদীবাঁধ ও পাড়কে চিহ্নিত করে ডিটেইল প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করে রাজ্যে সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবে কমপক্ষে জেলার ছয়-সাতটি নদীকে চিহ্নিত করে ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। বর্ষার আগেই মালদহে ভাঙন সমস্যা মেটাতে এনিয়ে সেচদপ্তরের আধিকারিকদের তৎপরতা শুরু হয়েছে। ওই প্রস্তাব রাজ্য থেকে অনুমোদিত হয়ে এলেই স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন দপ্তরের কর্তারা।
এবিষয়ে নাম না প্রকাশ করার শর্তে জেলা সেচদপ্তরের এক কর্তা বলেন, মালদহে (malda) ভাঙন সমস্যা মেটাতে স্থায়ীভাবে কাজ করা প্রয়োজন। যে কারণে আমরা বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করে স্থায়ী কাজের জন্য ৫০ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠিয়েছি। রাজ্য সরকার প্রস্তাব অনুমোদন করলে শীঘ্রই কাজ শুরু হয়ে যাবে। যত দ্রুত সম্ভব জেলায় ভাঙন সমস্যা মেটানো হবে। এবিষয়ে জেলা সেচদপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রণবকুমার সামন্ত বলেন, ভাঙন সমস্যা মেটাতে একাধিক প্রস্তাব রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদন হলে টেন্ডার প্রক্রিয়ার পর কাজ শুরু করা যাবে। স্থায়ীভাবে যাতে ভাঙন রোধ করা যায়, তাই বিভিন্ন নদীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, মাটির প্রকৃতির উপর নির্ভর করে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। নদী ভাঙন রোধে রাজ্য সরকারের সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় আছি।
মালদহে ভাঙন সমস্যা গত কয়েক দশক ধরে চলে আসছে। মূলত, গঙ্গা নদীতে প্রতিবছরই ভাঙন হয়। ভয়াবহ ভাঙনে গত কয়েক দশকে কালিয়াচকের একাধিক মৌজা নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। মানিকচক, কালিয়াচক ২ এবং ৩ ব্লক, বৈষ্ণবনগর এলাকায় গঙ্গায় ভাঙন হয়। কিন্তু স্থায়ীভাবে কাজ না হওয়ায় বহু জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। গঙ্গা ছাড়াও বামনগোলার পুনর্ভবা, গাজোল ও হবিবপুর ব্লকের টাঙ্গন নদীতে ভাঙনের ভয়াবহ সমস্যা রয়েছে। ফুলহার ও মহানন্দা নদীর বিভিন্ন এলাকাতেও ভাঙন হয়।
সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক-৩ ব্লকের পারলালপুর, কালিয়াচক-২ ব্লকের জোত কস্তুরী এবং মানিকচকের কশিঘাটে গঙ্গার ভাঙন রোধে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও হবিবপুর ব্লকের আইহো, গাজোল ব্লকের বাহেরপুরে টাঙ্গন নদীর ভাঙন সমস্যা মেটাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বামনগোলা ব্লকের কুপাদহর পুনর্ভবা নদীতে ভাঙন রোধে স্থায়ী পরিকল্পনা রয়েছে। বিভিন্ন নদীর বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। প্রস্তাবে কোথাও বোল্ডার বাঁধিয়ে তো কোথাও পলিব্যাগের স্তর তৈরি করে ভাঙন ঠেকানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য আরআইডিএফ (রুরাল ইনফ্রাকস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড) প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।