বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সাথে হাত মিলিয়েছিলেন, জিতিন প্রসাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক রাজ্য কংগ্রেস
আজই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক তথা এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক জিতিন প্রসাদ। বুধবার দিল্লিতে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপি-র দফতরে গিয়ে পীযুষ গোয়েলের উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগদান করেন তিনি।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের পর তৎকালীন পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ কংগ্রেস সংসদীয় দলের মুখ্য সচেতকের দায়িত্ব পেলে, বাংলার সংগঠনের দায়িত্বে আনা হয়েছিল তাঁকে। গত দু’বছর তিনি পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক ছিলেন। বামফ্রন্ট-কংগ্রেস ও আইএসএফের মধ্যে জোট হয়েছিল তাঁর পর্যবেক্ষণেই। কিন্তু বাংলার ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ইতিহাসে এই প্রথমবার কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি নেই। ভোটে হারের পর থেকেই আর বাংলায় দেখা যায়নি তাঁকে। এমনকি দলের বরিষ্ঠ কোনও নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি তিনি।
জিতিনের বিজেপিতে যোগদানের পর বিধানসভা ভোটে তাঁর বিশ্বাসঘাতকতা নিয়ে সরব হয়েছেন একাধিক কংগ্রেস নেতা। রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রোহান মিত্র এবিষয়ে টুইট করে লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে অভিনন্দন। জানা গেল যে আমরা ২০২১-এর ভোটে সমস্ত পরিকল্পনা, কৌশল শুধু বিজেপিকে জেতাতেই করেছি। তিন মাথা ছিল এসবের দায়িত্বে। কেন্দ্রের মাথা চলে গেল, এখন দুই স্থানীয় মাথা পড়ে রয়েছে।
জিতিন যে আগে থেকেই বিজেপির সাথে পরিকল্পনা করে বাংলায় কংগ্রেসের ভরাডুবি করিয়েছে এবিষয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের আরও বেশ কিছু নেতা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিলয় প্রামাণিক ফেসবুকে লিখেছেন, জিতিনই বাংলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের ভোটের প্রচারে আসতে বাধা দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁকে ভরসা করেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এমনকি ভোটের জন্য খরচের টাকাও সব তাঁর কাছেই ছিল। সেখানে প্রচারের টাকা দিতেও গড়িমসি করেছেন, দেরি করেছেন।
পর্যবেক্ষকের বিজেপি-তে যোগদান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও। তিনি বলেছেন, ‘তিনি যদি সত্যিই বিজেপি-তে যোগদান করেন তাহলে এটাই প্রমাণিত হয় পশ্চিমবঙ্গের ভোটে আমাদের যে ভরাডুবি হয়েছে, ফলাফলে বিপর্যয় হয়েছে, তার পিছনে ওই নেতার হাত ছিল। এই ধরনের লোক যদি পর্যবেক্ষক হন, সেই রাজ্যের সাংগঠনিক উন্নতি করা কখনওই সম্ভব নয়।’