১০০ দিনের কাজে ২ কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি, নজির গড়ল বাংলা
৬৬ দিনের ভোটপর্ব এবং তার ঠিক পরই করোনা মোকাবিলায় ‘আত্মশাসন’। অর্থাৎ নির্বাচনী আচরণবিধি এবং করোনা বিধির কড়া শাসন। এমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও ১০০ দিনের কাজে প্রায় ২ কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি করে নজির গড়ল বাংলা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী নির্বাচন ও করোনার ঝক্কি সামলে বাংলার তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ।
৩০ জুন পর্যন্ত রাজ্যকে ১ কোটি ৭৮ লক্ষ ১১ হাজার ৬৪৬ কর্মদিবস (Working Days) সৃষ্টির টার্গেট দিয়েছিল কেন্দ্র। ৯ জুনের মধ্যেই বাংলা সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে ১ কোটি ৮৯ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৬টি কর্মদিবস সৃষ্টি করেছে। দপ্তরের কর্তাদের দাবি, নবগঠিত রাজ্য সরকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের উপর জোর দেওয়ায় এই সাফল্য এসেছে। অন্যদিকে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাংলার তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে যোগীরাজ্য। উত্তরপ্রদেশে জুন পর্যন্ত ২ কোটি ৯১ লক্ষ ৯৫ হাজার ৮৯১টি কর্মদিবসের টার্গেট রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হয়েছে ২ কোটি ১৯ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭৫৫টি।
১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রকল্প আধিকারিক সুরজিৎ পণ্ডিত বলেন, নির্বাচনের কারণে এপ্রিল মাসজুড়ে সেভাবে এই প্রকেল্পর কাজে নজর দেওয়া সম্ভব হয়নি। নতুন সরকার গঠনের পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কাজের গতি অনেকটাই বেড়েছে।
যশ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১০০ দিনের প্রকল্পে (100 Days Work) কাজের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, প্রতিটি জেলা প্রশাসন সেই নির্দেশ পালনে তৎপর হয়েছে। কর্মদিবস সৃষ্টিতে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে যশ বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। সেখানে ২১ লক্ষ ৮ হাজার ৩৫২টি কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছে। তারপরই রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৪৫। তৃতীয় স্থানে থাকা পূর্ব মেদিনীপুরে কর্মদিবস সৃষ্টির সংখ্যা ১৬ লক্ষ ৬৮ হাজার ৮৭৪।
বাংলার এই সাফল্য সহজ ছিল না। কারণ নির্বাচনের জন্য ১০০ দিনের কাজে প্রভাব পড়েছিল। সরকার গঠনের আগেই করোনা তার থাবা প্রসারিত করে ফেলেছিল। তাই করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি গরিব মানুষের হাতে অর্থের জোগান দেওয়াটাই ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
করোনার প্রথম ঢেউয়ে গ্রাম বাংলার মানুষকে আর্থিক ভরসা দিয়েছিল এই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প। এর মাধ্যমে ভিন রাজ্য থেকে ফেরা বহু পরিযায়ী শ্রমিকের আর্থিক সংস্থানের জন্য নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। তাই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়েও যাতে গবির মানুষ সেই সুবিধা পান, সেদিকে সবচেয়ে বেশি নজর দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বলাই বাহুল্য, সেই উদ্দেশ্য সফল।