বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

বাড়ি ফিরতে পেরেও মন খারাপ প্যারোলে মুক্ত বন্দিদের

April 23, 2020 | 2 min read

তিন মাসে প্যারোলে ছাড়া পেয়ে রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগার থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন বন্দিরা। লকডাউন থাকার কারণে পুলিশের সহযোগিতায় গাড়ি করে বন্দিদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। 

মঙ্গলবার মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগার থেকে বাড়ি ফেরার আনন্দে ব্যাগ বা বোঁচকা নিয়ে যখন একে একে বন্দিরা বেরোচ্ছেন, ঠিক তখন গেটের সামনে দাঁড়িয়ে এক বন্দিকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মহিলা। কিছুক্ষণ পরই সেই বন্দি গেটের বাইরে বেরিয়ে মহিলাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, ‘মন খারাপ কর না। কান্নার কী আছে? ক’দিন পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আমি মেদিনীপুরে ফিরে আসব। তুমি ফিরে যাও, বাবু আবার কান্নাকাটি করবে। মালিককে বলে দিয়েছি, উনি আমার টাকাগুলো তোমাকে দেবেন। কোনও চিন্তা কর না। আমি ফিরে আসছি।’ ছলছল চোখে গাড়িতে উঠে যাওয়ার পর গাড়ির ভেতর থেকে আবার বললেন, ‘তুমি বাড়ি যাও, কোনও চিন্তা কর না। আমি আসছি।’

বন্দির নাম কাজল সরকার। নদিয়ার তাহেরপুর এলাকায় বাড়ি তার। কাজল খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। আর ওই মহিলা কাজলের স্ত্রী। বছর দুই আগে দমদম সংশোধনাগার থেকে মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগারে আসে কাজল। বন্দি দশায় বহুবার প্যারোলে ছাড়া পেয়েছেন কাজল। এমনই একবার ১২ দিনের প্যারোলে গিয়ে বারাসাতের ওই মহিলাকে বিয়ে করেন। মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগারে আসার পর শহরে একটি ফার্নিচারের শো-রুমে কাজের জোগাড়ও করে নেন। তারপর স্ত্রীকে মেদিনীপুরে নিয়ে এসে একটি ভাড়া বাড়িতে রাখেন। ১৮ মাসের সন্তানও রয়েছে কাজলের। সেই কারণেই কাজলের স্ত্রীর কান্না। স্ত্রী-সন্তানকে ছেড়ে যেতে মন খারাপ কাজলেরও।

মুক্ত সংশোধনাগারের বন্দিরা অনেকেই স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনদের নিয়ে এসে বাড়ি ভাড়া করে রেখেছেন সংশোধনাগারের আশেপাশে। প্যারোলে ছাড়া পেলেও বন্দিরা নিজেদের ইচ্ছেমতো জায়গায় থাকতে পারবেন না। সূত্রের খবর, সরকার ও সংশোধনাগার দপ্তরের নিয়ম অনুয়ায়ী, যে বন্দির যে এলাকায় বাড়ি, তাঁকে সেই এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ফলে ইচ্ছে থাকলেও পরিবারের কাছে থাকতে পারছেন না তাঁরা।

আবার অনেকে প্যারোলে ছাড়া পাওয়ার পরও বাড়ি ফিরতে পারছেন না। কারণ জেলে থাকাকালীন পারিশ্রমিকের জমা টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তোলার জটিলতা। টাকা না হলে যাবেন কী করে?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#home, #Lockdown, #prisoners

আরো দেখুন