আজও একটি ডাকের অপেক্ষায় যশোদাবেন

যশোদাবেনও চলে যান গুজরাটের মেহসানা জেলার ঈশ্বরওয়ারা গ্রামে ভাইদের কাছে। ভাইয়েরা তাঁর বিয়ে দিতে চাইলেও তিনি বিয়ে করেননি। একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা হিসেবে এখনো তিনি ওই গ্রামে পেনশন নিয়ে ভাইদের কাছে থাকেন।

June 10, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

মাত্র ১৭ বছর বয়সে যশোদাবেনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi)। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সংস্পর্শে গিয়ে মোদি সংসারধর্ম ত্যাগ করেন। সেই থেকে আর যোগাযোগ রাখেননি স্ত্রী যশোদাবেনের (Jashodaben) সঙ্গে।

১৯৬৮ সালে মোদি যশোদাবেনকে বিয়ে করেন। আরএসএসের সক্রিয় কর্মী হিসেবে মোদি সংসারধর্ম ত্যাগ করেন। এরপর আর তিনি যশোদাবেনের খোঁজ রাখেননি। যশোদাবেনও চলে যান গুজরাটের মেহসানা জেলার ঈশ্বরওয়ারা গ্রামে ভাইদের কাছে। ভাইয়েরা তাঁর বিয়ে দিতে চাইলেও তিনি বিয়ে করেননি। একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা হিসেবে এখনো তিনি ওই গ্রামে পেনশন নিয়ে ভাইদের কাছে থাকেন।

স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার পর মনে আশার আলো ফুটেছিল। যশোদাবেন মোদির ডাকের অপেক্ষা করতে থাকেন। সেইসময় মুম্বাইয়ের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার সাক্ষাৎকরে যশোদাবেন জানান, তিনি এখনো মোদির ডাকের অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। একবার ডাক পেলেই তিনি স্বামীর কাছে যাবেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ওঁর কাছে চলে যাব। ওঁর সেবা করব। তবে ফোনটা ওঁকেই করতে হবে। আমি মুম্বাইয়ের যে বাড়িতে এখন আছি, সেখানে এসেও যদি উনি বলেন যে আমার যাওয়া উচিত, তবে আমি চলে যাব।’

যশোদাবেন আরও বলেন, ‘ওঁর কাছ থেকে স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়াটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। সেদিন স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার খবরে আমার চোখে জল এসে গিয়েছিল। আমি নিশ্চিত, এখনো ওঁর মনে আমার জন্য জায়গা রয়েছে। আমাকে পছন্দই করেন। না হলে নির্বাচনের হলফনামায় আমার নাম লিখবেন কেন?’

তারপর কেটে গেছে সাত- সাতটা বছর। আসেনি কোন ডাক। স্বামীর সেবা করা আজও স্বপ্নই রয়ে গেছে যশোদার। স্বামীর ঘর করার স্বপন দেখতে দেখতে কেটে গেছে অর্ধ শতাব্দী। সেই সদ্য কিশোরী আজ জীবনের শেষ লগ্নে। চুলে পাক ধরেছে, মুখে বলিরেখাও স্পষ্ট। কিন্তু স্বপ্নের তো আর বয়স হয় না। তাই আজও সেই ডাকের স্বপ্ন দেখে চলেছেন তিনি। স্বামীর ঘর করা যেন রূপকথা। কিন্তু সেই স্বামীর কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। দেশের ন্যায়ের দায়িত্ব যিনি নিয়ে বসে আছেন সে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে নিজের ঘরে স্ত্রীর সাথে অন্যায় করে গেছেন, আজও যাচ্ছেন।

দীর্ঘ ৪৫ বছর পর নরেন্দ্র মোদি তাঁর স্ত্রীকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে গুজরাটের ভদোদরা আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়। মনোনয়নপত্রে তাঁর স্ত্রীর নাম লেখেন যশোদাবেন। প্রশ্ন উঠছে, এত দিন মোদি হলফনামায় স্ত্রীর নাম লেখেননি কেন? এর আগে গুজরাট বিধানসভায় মনোনয়ন পেশের সময় মোদি কখনোই স্ত্রীর নাম লেখেননি। এতদিন বৈবাহিক অবস্থা গোপন করে এবং ‘মিথ্যা হলফনামা’ দিয়ে আইন ভঙ্গ করেছেন মোদি?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen