দেশ বিভাগে ফিরে যান

‘মোবাইল ব্যবহারেই বাড়ে ধর্ষণ’ ইউপি মহিলা কমিশনের বক্তব্যে বিতর্ক

June 11, 2021 | 2 min read

দেশে ঘটে চলা ধর্ষণের ঘটনাগুলির জন্য মেয়েদের মোবাইল ফোন (phones) ব্যবহারকে কাঠগড়ায় তুললেন উত্তরপ্রদেশের মহিলা কমিশনের এক সদস্যা। আলিগড়ে মহিলাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের গণশুনানিতে হাজির হয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশ মহিলা কমিশনের সদস্যা (UP Women’s Commission member) মীনা কুমারী। সেখানেই তিনি বলেন, ‘মেয়েদের মোবাইল ফোন দেওয়াই উচিত নয়। তাহলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে তারা ছেলেদের সঙ্গে কথা বলবে। তার পর তাদের সঙ্গে পালিয়ে যাবে। সে জন্যই ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটছে। মেয়েদের ফোন কেউ দেখে না। পরিজনরাও এই ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারেই থাকেন।’ নারীদের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা অপরাধ রুখতে সমাজকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে বলেও দাবি করেন মীনাদেবী।

এখানেই শেষ নয়। কন্যাসন্তানদের লালন-পালনে মায়েদের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়েও নিজের মত দিয়েছেন তিনি। মীনাদেবীর কথায়, তাঁর কথায়, মেয়েদের বড় করার ক্ষেত্রে মায়েদের আরও যত্মবান হওয়া দরকার। মেয়েরা কখন কার সঙ্গে মেলামেশা করছে তা মায়েদেরই নজরে রাখা উচিত। মীনাদেবী বলেন, ‘মায়েদের দায়িত্ব অনেক। আজকে যদি তাঁদের মেয়েরা উচ্ছৃঙ্খল, দায়িত্বজ্ঞানহীন হয়ে ওঠে, তাহলে তার দায় মায়েদেরকেই নিতে হবে।’ মোবাইল ফোনের সঙ্গে ধর্ষণের সম্পর্ক বোঝাতে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। তাঁর সাফাই, ‘রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন মেয়েদের বিরুদ্ধে ২০-২২টি অপরাধের খবর পাই। দেখা যায় তার মধ্যে ৫-৬টি ঘটনার জন্য এই মোবাইল ফোনই দায়ী। আসলে গ্রামাঞ্চলের মেয়েরা এখনও মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার জানে না। ছেলেদের সঙ্গে ফোনে বন্ধুত্ব পাতিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পরে তারাই নির্যাতনের শিকার হয়।’

যদিও এসবে চিড়ে ভিজছে না। খোদ রাজ্যের মহিলা কমিশনের সদস্যের এহেন মন্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মীনা কুমারীর মন্তব্য থেকে দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশ মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন অঞ্জু চৌধুরী। বলেন, ‘মেয়েদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ রুখতে মোবাইল কেড়ে নেওয়াটা কোনও সমাধান হতে পারে না।’ এদিকে, মীনা কুমারীকে নিশানা করে তোপ দেগেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী তথা বাংলার মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, ‘যিনি মহিলাদের ব্যাপারে এমন যুক্তিহীন মন্তব্য করতে পারেন, তাঁর হাতে কেমন করে প্রশাসন ছেড়ে দেওয়া যায়? এই অমানবিক মন্তব্যকে ধিক্কার জানাই।’ চন্দ্রিমার সুরেই আক্রমণ শানিয়েছেন সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। কাকলির প্রতিক্রিয়া, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির প্রশাসনের এই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে মানুষকে ভগবানই রক্ষা করবেন। যদি খোদ মহিলা কমিশনের সদস্য নির্লিপ্তভাবে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেন, তাহলে তা উত্তরপ্রদেশের জন্য খুবই উদ্বেগের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#UP Women Commission, #Smart Phones

আরো দেখুন