মুকুলের প্রত্যাবর্তনের পরই ত্রিপুরায় নজর ঘাসফুল শিবিরের
একটা সময় মুকুল রায়ের হাত ধরে তিনি তৃণমূলে (TMC) যোগ দিয়েছিলেন। আবার মুকুলের অনুপ্রেরণাতেই সদলবলে তৃণমূল কংগ্রেস ভেঙে দিয়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। মুকুল রায় (Mukul Roy) তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করেছেন। ফের নজরে ত্রিপুরার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক চরিত্র সুদীপ রায়বর্মন। সূত্রের খবর, মুকুলের পরপর এবার সুদীপও বিজেপি ছাড়তে চলেছেন। তাঁর সঙ্গে গেরুয়া শিবির ছাড়বেন আরও বেশ কয়েকজন বিধায়ক।
বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই সুদীপবাবু বিপ্লব দেবের উলটো লবিতে পড়ে যান। বস্তুত ত্রিপুরায় বাম শাসনের অবসান ঘটানোর পিছনে সুদীপবাবুর অসীম গুরুত্ব থাকলেও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করেনি বিজেপি। আবার একাধিক ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব তাঁকে কোণঠাসা করে রেখেছেন। সরানো হয়েছে মন্ত্রীর পদ থেকেও। এখন খাতায় কলমে বিজেপিতে (BJP) থাকলেও ত্রিপুরার অন্যতম বিপ্লব বিরোধী মুখ সুদীপ। শোনা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই সরকারিভাবে বিজেপি ছাড়বেন তিনি। সেক্ষেত্রে ত্রিপুরা বিজেপিতে বড়সড় ভাঙনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, সুদীপবাবু ত্রিপুরার রাজনীতিতে বেশ প্রভাবশালী। কংগ্রেসে থাকাকালীন বিরোধী দলনেতা ছিলেন। তাঁর বেশ কয়েকজন অনুগামী বিজেপির টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, সুদীপবাবু (Sudip Roy Barman) বিজেপি ছাড়লে যাবেন কোথায়? সুদীপবাবুর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, বিজেপি ছাড়লে মুকুল রায়ের হাত ধরেই তৃণমূলে ফিরতে পারেন তিনি। ২০১৬ সালে কংগ্রেস (Congress) ত্যাগের পর বছর খানেক তৃণমূলে ছিলেন তিনি। আসলে বাংলায় বিজেপিকে প্রতিরোধ করার পর ত্রিপুরাতেও মমতার জনপ্রিয়তা অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে সুদীপবাবুর প্রথম টার্গেট হতে পারে তৃণমূলে ফেরা। যদিও, মমতা তাঁকে ফিরিয়ে নেবেন কিনা সেটা নিশ্চিত নয়। সেক্ষেত্রে সুদীপবাবু নিজের আলাদা রাজনৈতিক দল খুলতে পারেন। ইতিমধ্যেই ‘বন্ধুর নাম সুদীপ’ নামের একটি সংগঠন তিনি তৈরি করেছেন। সেই সংগঠনটি আবার স্থানীয় পুর নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ারও ছক কষছে। সেক্ষেত্রে সুদীপবাবু নিজের সংগঠনের ব্যানারেই বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল খুলতে পারেন। এবং পরবর্তীতে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের রাস্তা খোলা রাখতে পারেন। আরও একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে ত্রিপুরায় তৃণমূলের জোটের রাস্তা খুলতে পারে। তিনি হলেন সেখানকার রাজ পরিবারের সদস্য প্রদ্যোত মাণিক্য দেববর্মা। যার দল ‘ট্রিপরা’ কিছুদিন আগেই স্থানীয় নির্বাচনে বিজেপিকে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে।
যদিও, এখন সবটাই জল্পনার স্তরে। কারণ, এই মুহূর্তে ত্রিপুরায় তৃণমূলের কোনও সংগঠনই নেই। দলের রাজ্য ইউনিট অনেক আগেই ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। মুকুল রায়ের প্রত্যাবর্তনের পর সেরাজ্যে তৃণমূল নতুন করে শুরু করতে পারে বলে জল্পনা। সেক্ষেত্রে ত্রিপুরায় দলের সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে মুকুল রায়কেই।