১৬ই শিথিল বিধিনিষেধ? আজ সিদ্ধান্ত
সম্ভাবনা তৈরি হয়েই ছিল। এবার ইঙ্গিত আরও স্পষ্ট হল। শনিবার থেকেই ফের চালু হয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকারি দূরপাল্লার বাসের বুকিং ব্যবস্থা। দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার অধীনে থাকা সরকারি বাসগুলিতে অ্যাপের মাধ্যমে বুকিং করা যাচ্ছে। কলকাতা থেকে দীঘা, আসানসোল, বর্ধমান, মেদিনীপুরের মতো দক্ষিণবঙ্গের বহু শহরেই বুকিং দেওয়া শুরু করে দিয়েছে এসবিএসটিসি। একইভাবে শিলিগুড়ি, মালদহ সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলাতেও সিট বুক করা যাচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ইতিমধ্যেই টাকা দিয়ে সেই অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কেটে ফেলেছেন। সরকারি কর্তাদের একাংশ ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, বুধবার থেকে দূরপাল্লার বাস পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে বলেই অ্যাপে বুকিং নেওয়া হচ্ছে। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। আর সেটা হতে চলেছে আজ, সোমবার।
আজই খাদ্যসাথী এবং ধান সংগ্রহ নিয়ে দুপুর ৩টেয় বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকা, অর্থসচিব মনোজ পন্থ, কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার, কৃষিসচিব ওঙ্কার সিং মিনা, খাদ্য সচিব পারভেজ সিদ্দিকি এবং কৃষিদপ্তরের উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই বৈঠকে হাজির থাকবেন প্রত্যেক জেলার জেলাশাসক, খাদ্যদপ্তরের অফিসাররা। খাদ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি ‘আত্মশাসনে’র ভবিষ্যৎও এই বৈঠকে স্থির হবে বলে মনে করছেন অফিসাররা। অর্থাৎ, জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক করতে কঠোর বিধির গেরো কিছুটা হলেও শিথিল করার সম্ভাবনা রয়েছে। বণিকসভার বৈঠকে হোটেল-রেস্তরাঁ খোলার ক্ষেত্রে ছাড়ের দাবি উঠেছিল। মুখ্যমন্ত্রী সেই দাবিকে সমর্থনও জানিয়েছিলেন। তাঁর প্রস্তাব ছিল, বিকেল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত হোটেল-রেস্তরাঁ খোলা থাকুক। তবে এ ব্যাপারে নির্দেশিকা প্রকাশ করেনি নবান্ন। আশা করা হচ্ছে, আগামী বুধবার থেকেই এই ছাড় কার্যকর হবে। সেইসঙ্গে পরিবহণ ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে কিছু বাস নামানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যদিও লোকাল ট্রেন চলবে কি না, সে ব্যাপারে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। এরই মধ্যে স্টাফ স্পেশালে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হওয়ায় শিয়ালদহ ডিভিশনের তরফ থেকে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছেন ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার। তিনি লিখেছেন, ‘স্টাফ স্পেশালে রেলকর্মীদের পাশাপাশি অন্য বেশ কিছু ক্ষেত্রের কর্মীদের ওঠার অনুরোধ করেছিল রাজ্য সরকার। সেই অনুরোধ মেনেছে রেল। কিন্তু প্রতিদিনই এই লোকালে ভিড়ের মাত্রা বাড়ছে। যার প্রভাব পড়ছে শিয়ালদহ ডিভিশনের অধিকাংশ স্টেশনেই। ফলে করোনা বিধি মেনে ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে না।’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘লোকাল পরিষেবা বন্ধ করার জন্য রাজ্য সরকার অনুরোধ করেছিল। আমরা সেই প্রস্তাব মেনে গত ৬ মে থেকে ট্রেন বন্ধ রেখেছি। পুনরায় লোকাল চালুর জন্য রাজ্য সরকারকেই প্রস্তাব পাঠাতে হবে। তবে অতিরিক্ত ভিড় হওয়ায় করোনা বিধি মেনে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে আমরা রাজ্য সরকারকে জানিয়েছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।’ অর্থাৎ রেলের কথাতেই পরিষ্কার, লোকালের সংখ্যা না বাড়ালে বিধি মানা সম্ভব নয়।