নিউ মার্কেটের পুরনো বিল্ডিং সংস্কারে উদ্যোগী পুরসভা
শতাব্দীপ্রাচীন নিউমার্কেট (New Market) বা হগ মার্কেটের আমূল সংস্কারে হাত দিল কলকাতা পুরসভা (KMC)। ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে সমীক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি শুরু হয়েছে প্রাথমিক সমীক্ষাও। সেখানে পুরনো বিল্ডিংয়ের ছাদের একটা বড় অংশের যথেষ্ট খারাপ অবস্থা নজরে এসেছে বিশেষজ্ঞদের।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় হগ মার্কেটের সংস্কারের কথা সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান কলকাতা পুরসভার বাজার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আমিরুদ্দিন ববি। পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমানে এস এস হগ মার্কেটের জ্যামিতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ হচ্ছে। একে বলে ‘ডিফর্মেশন সার্ভে’। ‘অপটিক্যাল টি এস’ যন্ত্রের লেজার রশ্মির মাধ্যমে দূর থেকেই চলছে এই পরীক্ষা। এই মাধ্যমেই দেওয়ালগুলির অবস্থা বা মার্কেটের আর্চগুলির জ্যামিতিক চরিত্রের ধারণা পাওয়া যাবে। কাঠামো কতটা সুসংহত অবস্থায় রয়েছে, কোথাও কোনও সমস্যা তৈরি হয়েছে কি না, তাও বোঝা যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউ মার্কেট তৈরির সময়ে ‘ফ্ল্যাট রুফ’ বা এখনকার মতো ছাদ তৈরির রীতি ছিল না। কারণ তার জন্য কংক্রিট, বিম, টাইলসের প্রয়োজন পড়ত। সম্ভবত চুন-সুরকি দিয়েই নিউ মার্কেটের ‘সিলিন্ড্রিকাল ভল্ট রুফ’ বা নলাকৃতি কাঠামোর ছাদ তৈরি হয়েছিল। ছাদের বিভিন্ন অংশই সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত বছর ডিসেম্বরেই যাদবপুরকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মাঝে নানা জটিলতায় সেই কাজ এগয়নি। সম্প্রতি গত সপ্তাহে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা মার্কেট পরিদর্শন করেন। এদিন এনিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনস্ট্রাকশন বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ সোমের সঙ্গে আমিরুদ্দিন (ববি) বৈঠক করেন। ছিলেন বাজার দপ্তরের আধিকারিকরাও। বৈঠকে পর আমিরুদ্দিন জানান, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ সোমের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ১২০ দিনের মধ্যে এই কমিটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবে। যে রিপোর্টে মূলত উল্লেখ থাকবে কীভাবে ওই পুরনো অংশের সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে। একইসঙ্গে খরচ এবং সময়ের হিসেবও থাকবে। পাশাপাশি ফুটনানি চেম্বারেরও সংস্কারের কাজে হাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কমিটিকে ফুটনানি চেম্বার সংস্কারের জন্য রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এক কর্তা বলেন, লকডাউনের সময়টাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এখন মার্কেট অল্প সময়ে খোলা থাকছে। এই সুযোগে কাজটা কিছুটা এগিয়ে যাবে। পুরনো অংশে রয়েছেন মোট ১২০০ ব্যবসায়ী। মূলত রাতে কিংবা দোকান বন্ধ থাকাকালীন সময়েই সংস্কারের কাজ করা হবে।
প্রায় ১৪৭ বছরের পুরনো এস এস হগ মার্কেট। এই মার্কেটের সংস্কার করা হলেও পুরনো অংশে হাত দেওয়া হয়নি। এবার সেই পুরনো অংশের সংস্কারে হাত দিতে চলেছে পুরসভা।