খুব শীঘ্রই উত্তরবঙ্গ সফরে মমতা
উত্তরবঙ্গকে (North Bengal) কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি তুলেছেন বিজেপি (BJP) সাংসদ জন বার্লা (John Barla) । কেএলও (KLO) প্রধান জীবন সিংহও সম্প্রতি ভিডিয়ো-বার্তায় রাজ্য সরকারকে নানা কারণে কাঠগড়ায় তুলেছেন। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (North Bengal) উত্তরবঙ্গ সফরে আসবেন বলে দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যায় বৃহস্পতিবার সকালে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের শীর্ষমহল থেকে জানানো হয়েছে, কয়েকটি কারণে আপাতত এই সফরটি স্থগিত থাকছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী যে শীঘ্রই উত্তরবঙ্গে আসবেন, সেই ব্যাপারেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতেই রয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। এ দিন সকালে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছিল, ২১ জুন তিনি চার দিনের সফরে শিলিগুড়ি আসবেন। কিন্তু পরে শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন গৌতম দেব (Gautam Deb) জানান, একে তো বাংলা জুড়ে প্রবল ভাবে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় এখন বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সে দিকে নজর রাখতে নবান্নে থাকাটা জরুরি বলে মনে করছে প্রশাসনের শীর্ষমহল। ২৬ জুন ভরা কটালের সম্ভাবনাও রয়েছে। তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে প্রশাসনকে। তার উপরে ১ জুলাই পর্যন্ত গোটা রাজ্যে করোনা সংক্রান্ত কড়াকড়ি জারি রয়েছে। তাই সফর আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোন তাঁর কথা হয়েছে, এই তথ্য জানিয়ে গৌতম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আপাতত সফর স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছেন। পরে নতুন দিন ঠিক করা হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গবাসী এই অঞ্চল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার জন্য অপেক্ষা করছেন।’’
তৃণমূল (TMC) সূত্রে বলা হচ্ছে, বিজেপির কয়েকটি সূত্র থেকে যে ভাবে উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি তোলা শুরু হয়েছে, তাতে গোটা এলাকায় নতুন সমস্যার বাতাবরণ তৈরি হতে পারে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যাচ্ছে, কেএলও বা গোর্খাদের আন্দোলনের সময়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল।
এ বারে যাতে সেটা না হয়, তাই মুখ্যমন্ত্রী বার্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যেই নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ করতে দেবেন না। পাশাপাশি, শীঘ্রই তাঁর উত্তরবঙ্গ সফরের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তখন তিনি পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে উদ্ভুত পরিস্থিতির মোকাবিলায় কী করা উচিত, তা-ও আলোচনা করতে পারেন।
একই সঙ্গে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করার বিষয়টিও রয়েছে, জানিয়েছে তৃণমূল সূত্রই। কোচবিহার থেকে দার্জিলিং— এই পাঁচটি জেলায় তৃণমূলের ফল এ বারে ভাল হয়নি। দলের একাংশের বক্তব্য, তাই মমতা উপস্থিত হয়ে সরাসরি কর্মীদের প্রতি বার্তা দিলে তাঁদের মনোবল বাড়বে। বিশেষ করে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় এমন বৈঠক জরুরি বলে মনে করেন দলের সংশ্লিষ্ট জেলা নেতারা।
এখনও পর্যন্ত অবশ্য প্রকাশ্যে জন বার্লার পাশে গেরুয়া শিবিরের খুব বেশি নেতানেত্রীকে দেখা যাচ্ছে না। বিজেপির অনেকেই বলেছেন, এটা বার্লার ব্যক্তিগত বক্তব্য। বিজেপি নেতৃত্ব কোথাও আলাদা রাজ্যের কথা বলেননি। ১৯ জুন কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার বিধায়ক ও সাংসদের নিয়ে বৈঠকও করবেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “নানা বিষয় বৈঠকে আলোচনা হবে।”