কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

ভোটপর্ব মিটতেই জঙ্গলমহলে বিজেপি ও কংগ্রেসে বড়সড় ভাঙন

June 19, 2021 | 2 min read

জঙ্গলমহল পুরুলিয়ায় (Purulia) ফের বিজেপি ও কংগ্রেসে বড়সড় ভাঙন। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা বিজেপির অজিত বাউরি সহ গেরুয়া শিবির ও কংগ্রেস মিলিয়ে জেলা পরিষদের মোট চার সদস্য সদলবলে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন।

শনিবার পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল (tmc) কার্যালয়ে জেলা পরিষদের চার সদস্য বিজেপির (bjp) অজিত বাউরি, মানিকচাঁদ কুমার, কংগ্রেসের রাজীব সাহু, তনুশ্রী বাউরি ছাড়াও পুরুলিয়া বিধানসভার কংগ্রেসের প্রার্থী তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায়, এই বিধানসভার পুরুলিয়া শহর কংগ্রেস সভাপতি বিশ্বরূপ পট্টনায়ক, পুরুলিয়া পুরসভার দু ‘নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর তথা ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর ববিতা কর্মকার, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর কথা কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলার আরতি পান্ডে, ন’নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর জয়দেব দত্ত, এক আইনজীবী সহ একাধিক বিজেপি,কংগ্রেস নেতা-কর্মী তৃনমূলে যোগ দেন। এদিন তাঁদের গলায় উত্তরীয় ও হাতে ব্যাজ দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলে যোগদান করান রাজ্যের আইন, বিচার ও পূর্ত বিভাগের মন্ত্রী মলয় ঘটক। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা দলের কো-অর্ডিনেটর সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই যোগদান হয় ।

এদিন এই যোগদান পর্বে ছিলেন ছিলেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা-সংস্কৃতি- তথ্য- ক্রীড়া স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ গুরুপদ টুডু ও দুই কো-অর্ডিনেটর সুষেন চন্দ্র মাঝি মিনু বাউরি, বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেন। যোগদান পর্ব শেষে মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ” তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিধানসভা নির্বাচনে যে বিশাল সাফল্য মিলেছে সেই সাফল্যের কারণে পুরুলিয়ায় বিরোধী শিবিরে আজ বড়সড় ভাঙন হলো পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বাকি বিরোধী সদস্যরাও খুব শীঘ্রই তৃণমূলে আসবেন।”

পুরুলিয়া জেলা পরিষদের মোট ৩৮ টি আসন গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী তৃণমূল কংগ্রেস জেতে ২৬ টি আসনে বিজেপি পায় ন’টি ও কংগ্রেস দখল করে তিনটি আসন । সেই পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়া মিটে গেলে রঘুনাথপুর দু’ নম্বর ব্লক এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য লিপিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাঘমুন্ডি ব্লকের আরেক জেলা পরিষদ সদস্য সুবোধ কুমার তৃণমূলে এসেছিলেন ফলে শাসক দলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২৮। এই যোগদানের ফলে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের তৃণমূলের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩২। ফলে বিজেপির আসন সংখ্যা কমে হল পাঁচ, কংগ্রেসের এক । এদিন শাসক দলে যোগ দিয়ে বিরোধী দলনেতা অজিত বাউরী বলেন, “প্রয়াত নেতা অটল বিহারী বাজপেয়ী জমানায় বিজেপি যা ছিল এখন আর তা নেই । বিজেপি আদর্শচ্যুত হওয়াতেই আজ এই অবস্থা। তাই তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে শরিক হতেই আমি তৃণমূল কংগ্রেসে এলাম । তাছাড়া সভাধিপতির নেতৃত্বে পুরুলিয়া জেলা পরিষদে যেভাবে উন্নয়নের কাজ চলছে সেই কাজে শামিল হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই । এইজন্যই তৃণমূল কংগ্রেসে আসা আগামী দিনে আরও অনেক বিজেপি নেতা-কর্মী এ জেলায় তৃণমূলে যোগ দেবেন ।”

এদিন বিজেপি ও কংগ্রেস মিলিয়ে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী শাসক দলে যোগদান করায় এই জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের আরও শক্তি বৃদ্ধি হল । তবে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের শাসক দলের একধিক সদস্য দলের বিরুদ্ধে গিয়ে সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার তোড়জোড় শুরু করেছেন বলে অভিযোগ । সেই কারনেই বিরোধী শিবির ভাঙিয়ে জেলা পরিষদের চার সদস্যকে দলে টানা! তবে সভাধিপতি বলেন, “অনাস্থা আবার কি? আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে এই চেয়ারে বসিয়েছেন । যেদিন নির্দেশ দেবেন এই প্রশাসনিক পদ থেকে সরে দাঁড়াব । তবে যতদিন তৃণমূল করবো দলের সংঘটন বৃদ্ধিতে কাজ করে যাবো। এই ভাবেই বিরোধী শিবির ভাঙিয়ে তৃণমূলকে শক্তিশালী করবো ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#tmc, #Purulia, #bjp

আরো দেখুন