রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

প্রবল বৃষ্টির মধ্যে জল ছাড়ছে ডিভিসি, বন্যার আশঙ্কা

June 20, 2021 | 2 min read

অতি বর্ষণ এবং ডিভিসি (DVC) জলাধার থেকে নাগাড়ে জল ছাড়ার জেরে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে বন্যার আশঙ্কা প্রবল হয়েছে। টানা বৃষ্টির জেরে এমনিতেই দক্ষিণবঙ্গের (SouthBengal) বিশেষ করে নিম্ন দামোদর অববাহিকা অংশের নদীগুলি টইটম্বুর। তার উপরে ডিভিসি জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়তে থাকায়, কোথাও নদীর জল বাঁধ উপচে আবার কোথাও বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিপত্তি এড়াতে বাঁধ লাগোয়া নিচু অংশগুলি থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে হাওড়া এবং হুগলি জেলা প্রশাসন। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতা এবং হুগলির খানাকুল, আরামবাগ ও গোঘাটের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় মুণ্ডেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর ও রূপনারায়ণের বেশ কয়েকটি অংশের নদীবাঁধে ধস নামতে শুরু করেছে। বাঁধ ভাঙার খবর এসেছে খানাকুল, গোঘাট, উদয়নারায়ণপুর সহ কয়েকটি জায়গা থেকেও। হুগলির চাঁপাডাঙা এবং হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে দামোদর নদের জল বাঁধ উপচে লোকালয়ে ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই দুই এলাকা থেকেও সরানো হয়েছে লোকজনকে। জলস্তর বেড়ে ফুঁসতে শুরু করেছে কুনুর, অজয় নদ ও ভাগীরথী।

বিপদের আশঙ্কা করা হচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের কয়েকটি এলাকাকে নিয়ে। সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র জানিয়েছেন, যেভাবে লাগাতার জল ছাড়া হচ্ছে ডিভিসির জলাধারগুলি থেকে, তাতে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান সহ দক্ষিণবঙ্গের এক বিস্তীর্ণ অংশে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে দপ্তর।  


শুধু ডিভিসিই নয়, জল ছাড়া শুরু হয়েছে মাইথন, তিলপাড়া ও পাঞ্চেত জলাধার থেকেও। তার জেরে বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ জেলার কিছু অংশে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মাইথন এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২০৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ায় বিপত্তি আরও বেড়েছে। শুক্রবার একদিনে মাইথনের জলস্তর আট ফুট বেড়ে গিয়েছে। জলস্তর বেড়েছে ঝাড়খণ্ড সীমানা সংলগ্ন বীরভূমের মুরারই-১ ব্লকের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাগলা, সরবতী ও বাঁশলই নদীর। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার বেশ কিছু এলাকা শুক্রবার রাত থেকে প্লাবিত হতে শুরু করেছে। সেচদপ্তর সূত্রে খবর, উদয়নারায়ণপুরে কমপক্ষে ১৫টি জায়গায় নদীবাঁধের অবস্থা বিপজ্জনক। স্পিল জোন হওয়ার কারণে এখানে বাঁধ বেশি উঁচু করা যায় না। তাই জলস্তর বেড়ে বাঁধ উপচে যাওয়ার ঘটনাও এখানে বেশি।


প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সঙ্গেই নবান্নে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দিন-রাত কাজ চলবে সেখানে। প্লাবনের শঙ্কাকে মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ সামগ্রী এবং ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। ওই সূত্রটি আরও জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে উত্তরবঙ্গে। বন্যার ভ্রুকুটি সেখানেও। রাজ্যের সব জেলাশাসক এবং পুলিস সুপারকে সতর্ক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। কারণ, আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গণেশচন্দ্র দাস জানিয়েছেন, রবিবারও দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় মাঝারি থেকে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হবে উত্তরবঙ্গেও। তবে কাল, সোমবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#dvc

আরো দেখুন