ফ্যান খারাপ, নোংরা বাথরুম, খাবারের দশাও তথৈবচ – উত্তরপ্রদেশে স্বাস্থ্যকর্মীদের করুণ দশা
করোনা মোকাবিলায় যুক্ত থাকা ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হাসপাতাল থেকে বাড়ি যাওয়ার ক্ষেত্রে বহু আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, হাসপাতাল থেকে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কোনও হোটেল বা গেস্ট হাউসে। সেখানে রাত কাটিয়ে পরের দিন হাসপাতালে আসছেন তাঁরা। কিন্তু এই পরিষেবা নিয়েই অভিযোগ তুলেছেন বহু স্বাস্থ্যকর্মী। অনেক জায়গাতেই এই স্বাস্থ্যকর্মীদের রাখার জায়গার ব্যবস্থা ভাল নয় বলেই অভিযোগ উঠছে। উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলিতে তো ডাক্তাররা ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তারপরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
জানা গেছে, সেই ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পাওয়ার পরে ও ডাক্তারদের লেখা অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেন রায়বরেলির চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডক্টর এস কে শর্মা। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে সেখানে গিয়ে দেখেছি। সত্যিই সেটা থাকার মতো নয়। ওনাদের কাছেই একটা গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে বিদ্যুৎ বা বাথরুমের কোনও সমস্যা নেই। আমরা লাইভ কিচেনেরও ব্যবস্থা করেছি, যাতে ডাক্তারদের গরম গরম খাবার দেওয়া যায়।’
রায়বরেলিতে কিছু স্বাস্থ্যকর্মীর থাকার জন্য হাসপাতালের নিকটবর্তী একটা স্কুলে ব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তাঁরা সেখানে যান। কিন্তু ব্যবস্থা দেখে তাঁদের হাল খারাপ। দেখেন একটিও ফ্যান চলছে না। মাঝেমধ্যেই কারেন্ট চলে যাচ্ছে। বাথরুমের হাল তো তথৈবচ। তখনই তাঁরা ঠিক করেন অভিযোগ জানাবেন। তার জন্য ভিডিও তোলা শুরু করেন তাঁরা।
মঙ্গলবার মাঝরাত ও বুধবার দুপুরে মোট তিনটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন সেই স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রথম ভিডিওতে একজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘এখন রাত ৩টে। কারেন্ট নেই। চারজনকে একটা রুমে রাখা হয়েছে। কিন্তু একটাও ফ্যান কাজ করছে না। আমি আপনাদের বাথরুমের অবস্থা দেখাই। জল বেরনোর কোনও পাইপ নেই।’
বুধবার দুপুরে তোলা একটি ভিডিওতে একজন ডাক্তারকে পিপিই কিট পরে কথা বলতে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘একটা স্কুলে একটা বড় ক্লাসরুমে চারজনের শোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটা কোয়ারেন্টাইনের নিয়মের বাইরে। আমরা যখন বললাম বাথরুম খারাপ ওরা আমাদের মোবাইল টয়লেট এনে দিল। রাতে কারেন্ট থাকছে না। আমাদের ২০ লিটার জল দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে এই জলই ভাগ করে খেতে হবে।’
আর একটি ভিডিওতে খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। একজন দেখিয়ে বলেন, ‘এই খাবারের দিকে তাকান। এটা লাঞ্চ। একটা পলিথিনের প্যাকেটে পুরি, সবজি সব একসঙ্গে দিয়ে দিয়েছে। এটা সেই ডাক্তারদের জন্য যাঁরা করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করছেন।’