উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহলের পর এবার নদীয়াকে আলাদা রাজ্য করার দাবি সামাজিক মাধ্যমে
নদীয়াকে পৃথক রাজ্য করতে হবে। রাজধানী হবে নবদ্বীপ। মুখ্যমন্ত্রী হবেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। ফেসবুকে ঘুরছে এমনই একটি পোস্ট।
বাংলা ভাগ নিয়ে বিজেপির (BJP) দুই সাংসদের বিতর্কিত মন্তব্যের রেশ কাটার আগে, ফের জন্ম হল নতুন বিতর্কের। উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের পর এবার কেন্দ্রবিন্দু নদীয়া।
নদীয়াকে পৃথক রাজ্য করার দাবি তোলা পোস্টটি করা হয়েছে ‘বাংলায় গেরুয়া ঝড়’ নামে একটি পেজের ওয়াল থেকে। পেজে প্রোফাইল পিকচারে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ছবি। কভার ফোটোতে বিজেপির প্রতীক। বিজেপি সমর্থকদের ছবি।
এই পেজ থেকেই মঙ্গলবার বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের ছবি দিয়ে পৃথক নদীয়া রাজ্যের দাবি তোলা হয়। যা নিয়ে বেঁধেছে বিতর্ক।
বিজেপি সাংসদের দাবি, এসবই তৃণমূলের চক্রান্ত। ফেসবুক লাইভ করেও এই অভিযোগ করেন তিনি। বললেন, এই ঘৃণ্য কাজের পেছনে তৃণমূলের চক্রান্ত। বিজেপি সাংসদ সরাসরি তৃণমূলকে দায়ী করেন।
বিজেপি সাংসদের পাশে দাঁড়িয়ে একই দাবি তুলেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি স্বপন দাম দাবি করেন, তৃণমূলের ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে এসব করা হচ্ছে।
যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। নদীয়া জেলা পরিষদ তৃণমূল নেতা ও সহ সভাধিপতি দীপক বসু। এদিকে, ফেসবুক পোস্ট নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন বিজেপি সাংসদ।
পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তীব্র বাক্য বিনিময় হচ্ছে। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা চাইছেন পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ দাবি করছেন আলাদা জঙ্গলমহল রাজ্যের।
যা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বঙ্গভঙ্গের অভিযোগে সরব তৃণমূল। সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার বিজেপি মিডিয়া সেলের বৈঠকে সদস্যদের একাংশ দিলীপ ঘোষের কাছে অভিযোগ করেন, জন বার্লা ও সৌমিত্র খাঁ যেভাবে আলাদা রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছেন, তাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতি হচ্ছে।
দুই সাংসদকে সতর্ক করার দাবি জানানো হয়। এরপরই দিলীপ ঘোষ অত্যন্ত কড়াভাবে এই ইস্যুতে দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করে দেন। বলেন, আলাদা রাজ্যের মত একান্ত ব্যক্তিগত। পশ্চিমবঙ্গ ভাগ হবে না, এটা দলের মত। পার্টিতে থাকতে হলে দলের মত মেনে থাকতে হবে। আর পার্টিলাইন একটাই, পশ্চিমবঙ্গ ভাগ হবে না।
দিলীপ ঘোষের কড়া অবস্থানের পর সৌমিত্র খাঁ সুর নরম করেন। কিন্তু, নিজের অবস্থানে অনড় থেকে বিতর্ক জিইয়ে রাখেন জন বার্লা। এদিন তিনি বলেন, বিজেপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। এই কারণেই পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তুলেছি।