রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বেকরাত্ব – বিজেপি শাসিত রাজ্যের তুলনায় ভালো আছে বাংলা

June 24, 2021 | 2 min read

এরাজ্যের কর্মসংস্থানের হাল নিয়ে মাঝেমধ্যেই সমালোচনায় মুখর হন কেন্দ্রীয় সরকারের নানা মাপের মন্ত্রীরা। তাতে গলা মেলান বঙ্গ বিজেপির নেতারাও। কিন্তু সেসব নিন্দামন্দের ফানুস ফুটো করে দিল নীতি আয়োগের সাম্প্রতিক রিপোর্ট। এদেশের রাজ্যগুলির বেকারত্বের হাল কী, সম্প্রতি তার উপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তারা। সেখানেই দেখা যাচ্ছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সিংহভাগকে ১০ গোল দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা। গুজরাত বা কর্ণাটকের মতো দু’একটি রাজ্য বাদ দিলে সিংহভাগ বিজেপি শাসিত বা বিজেপি জোট সরকার পরিচালিত রাজ্যগুলির থেকে ঢের এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ।

গত আর্থিক বছর, অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবর্ষে কোন রাজ্যে বেকারত্বের (unemployment) হার কত ছিল, তার উপর নির্ভর করে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আওতায় থাকা নীতি আয়োগ। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী এরাজ্যে বেকারত্বের হার ৪.১ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ১০০ জনের মধ্যে প্রায় চার জনের কোনও রোজগার নেই এখানে। তাঁরা চাকরি, পেশা বা ব্যবসার মতো কোনও আর্থিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নন। নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বেকারত্বের হার কী, এবার তা দেখে নেওয়া যাক। অরুণাচল প্রদেশে বেকারত্বের হার ৭.৭ শতাংশ। অসমে ৭.১, গোয়ায় ৯.৪, হিমাচল প্রদেশে ৫.৮, মনিপুরে ১০.১, ত্রিপুরায় ১০.৫, উত্তরপ্রদেশে ৬.২, উত্তরাখণ্ডে ৯.৫, হরিয়ানায় ৯.৮, বিহারে ১০.৬, মিজোরামে ৭.৩, নাগাল্যান্ডে ১৮.৫ এবং পুদুচেরিতে ৮.৭ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে যে যে বিজেপি শাসিত রাজ্য এগিয়ে আছে, সেগুলির মধ্যে গুজরাতে বেকারত্বের হার ৩.৪ শতাংশ। কর্ণাটকে তা ৩.৯, মধ্যপ্রদেশে ৩.৭, মেঘালয়ে ২.৮ এবং সিকিমে ৩.৩ শতাংশ। নীতি আয়োগের রিপোর্ট বলছে, দেশে সবচেয়ে বেশি বেকারত্বের হার লাক্ষাদ্বীপে, ৩২ শতাংশ। দাদর ও নগর হাভেলিতে সেই হার ১.৫ শতাংশ, যা দেশে সবচেয়ে কম।

যে সময়সীমাকে সামনে রেখে নীতি আয়োগ ওই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তা ছিল মূলত করোনার বছর। বহু মানুষ সেই সময় চাকরি হারিয়েছেন। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপও থমকে ছিল। এই অবস্থায় বেকারত্ব বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের যে অবস্থা রিপোর্টে ধরা পড়েছে, তা যথেষ্ট আশাদায়ক, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ তো গেল সার্বিক বেকারত্বের চেহারা। করোনার বছরে, অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবর্ষ এই রাজ্যে যে বড় রকমের নতুন চাকরির সুযোগও যে তৈরি হয়েছে, তাও জানা গিয়েছিল কেন্দ্রীয় রিপোর্ট থেকেই। শ্রমমন্ত্রক জানিয়েছিল, এরাজ্যে গত আর্থিক বছরে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ নতুন চাকরি পেয়েছেন। নয়া চাকরিতে যোগদান করে কতজন নতুন করে পিএফের সুবিধা পাচ্ছেন, তার উপর ভিত্তি করেই ওই রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল শ্রমমন্ত্রক। অর্থাৎ সবটুকুই সংগঠিত ক্ষেত্রে, বলা ভালো তুলনামূলক বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি।

গত আর্থিক বছরে কাজের বাজার তৈরিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ নরেন্দ্র মোদী সরকার, বলছে রিপোর্ট। ইন্টারন্যাশনাল লেবর অর্গনাইজেশনসের দেওয়া তথ্য বলছে, গত বছর দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৭.১১ শতাংশ। ১৯৯১ সাল থেকে কখনও এতটা বাড়েনি বেকারত্ব। এমনকী বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের বেকারত্বের হারও পিছিয়ে দিয়েছে ভারতকে। অথচ করোনার প্রভাব সেসব দেশে কম পড়েনি। সেন্টর ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ১১.৯ শতাংশ। এক মাসে দেশে দেড় কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন, বলছে এই অগ্রণী সংস্থা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #unemployment

আরো দেখুন